ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

রবীন্দ্র রচনাবলী

বুদ্ধদেব বসুর গল্প

সংগ্রহ ও ভূমিকা : সৈকত হাবিব | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০১১
বুদ্ধদেব বসুর গল্প

[বুদ্ধদেব বসুর নাম তোমরা নিশ্চয়ই শুনেছো। অনেক বড় লেখক ছিলেন তিনি।

ছিলেন বড় কবি। এর বাইরেও কত কী যে করেছেন তিনি! উপন্যাস লিখেছেন, গল্প লিখেছেন, নাটক লিখেছেন, প্রবন্ধ ও সমালোচনা লিখেছেন। লিখেছেন নিজের ছেলেবেলা, তরুণবেলা আর সাহিত্যজীবনের কথা। ছিলেন অনেক বড় সম্পাদক। আবার শিশু-কিশোরদের জন্যও লিখেছেন অনেক কিছু। আর অনেক সুন্দর সুন্দর কবিতার অনুবাদ করেছেন তিনি পৃথিবীর বিখ্যাত অনেক কবির। বুদ্ধদেব বসু সম্পর্কে একটি কথা হয়তো তোমাদের জানলে ভালো লাগবে, বাংলা ভাষায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পর, সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তিনিই সবচেয়ে বেশি লিখেছেন। তবে এর বাইরে রবীন্দ্রনাথ অনেক গান লিখেছেন, ছবি এঁকেছেন। তোমরা বড় হয়ে একটি বিখ্যাত পত্রিকা ‘কবিতা’র কথা জানবে। এই পত্রিকাটি বুদ্ধদেব বসু পঁচিশ ধরে সম্পাদনা করেছেন। সেখানে আজকে যারা অনেক বড় কবি তাদের অনেকেরই লেখা ছাপা হয়েছে, যখন তারা এত বড় কবি হননি। তাদের মধ্যে আছেন আমাদের কবি শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, সৈয়দ শামসুল হক। ‘কবিতা ভবন’ নামে ছিল তার একটি প্রকাশনা সংস্থা। সেখান থেকে ‘এক পয়সায় একটি’ বলে একটি সিরিজ বের করেছিলেন বিখ্যাত সব কবিদের। কবি জীবনানন্দ দাশের বিখ্যাত কবিতার বই ‘বনলতা সেন’ এই কবিতাভবন থেকেই প্রথম বের হয়েছিল। বলা যেতে পারে, সাহিত্যই ছিল বুদ্ধদেব বসুর ধ্যানজ্ঞান। এছাড়া ‘তুলনামূলক সাহিত্য’ বলে পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ রয়েছে। এই উপমহাদেশে তিনিই প্রথম এই বিভাগটি চালু করেন পশ্চিমবঙ্গের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে, ১৯৫৬ সালে। সেখানকার অনেক ছাত্র এখন ইউরোপ-আমেরিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরা শিক্ষক। বুদ্ধদেব বসু বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের জন্য অনেক অনেক কাজ করেছেন, বড় হলে যেগুলো তোমরা জানতে, পড়তে ও বুঝতে পারবে।

এবার বুদ্ধদেব বসুর জীবনের কথা একটু বলি। তাঁর জন্ম ১৯০৮ সালে, কুমিল্লায়। জন্মের সময় মা মারা যান, এরপর বাবাও নিরুদ্দেশ। নানা-নানীর কাছেই বেড়ে উঠেছেন। ছোটবেলা কেটেছে নোয়াখালীতে। শৈশব থেকেই ছিলেন বইয়ের পোকা। নানা বিষয়ে পড়তেন। খুব মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এমএ প্রথম শ্রেণী লাভ করেন ১৯৩১ সালে। পরে কোলকাতা চলে যান। সেখানেই তার কর্মজীবনের বিস্তৃতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় তার বন্ধু অজিত দত্তের সঙ্গে মিলে প্রকাশ করেন বিখ্যাত ‘প্রগতি’ পত্রিকা। পরে কলকাতা থেকে বের করেন বিখ্যাত পত্রিকা ‘কবিতা’।   ১৯৭৪ সালে কলকাতায় তিনি মারা যান। তার সহধর্মিণী প্রতিভা বসুও ছিলেন একজন নামকরা লেখক।

বুদ্ধদেব বসু সম্পর্কে একটি কথা বলা হয়, তার লেখার ভাষা অত্যন্ত সুন্দর ও মজার। এ কথাটি যে খুব সত্যি, হয়তো এখানে ছাপানো ‘রবীন্দ্র রচনাবলী’ গল্পটা পড়লেই তোমরা বুঝতে পারবে। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে কলকাতায় কেউ কেউ নানারকম ব্যবসা-বাণিজ্য করে হঠাৎ খুব ধনী হয়ে ওঠেন। তারা তখন বড় বড় বাড়িই বানাতেন না, সঙ্গে নিজেদের বাড়িতে ঘর সাজানোর জন্য কিনতেন বই এবং ছবি। কিন্তু এগুলোর পড়া বা বোঝার চাইতে ঘরের সৌন্দর্যের কাজেই বেশি দরকার হতো। বই ময়লা হয়ে যাবে মনে করে কাউকে পড়তেও দেওয়া হতো না। অথচ এক বইপাগল কিশোরের কাছে বই পড়াতেই ছিল যত আনন্দ। পুরো গল্পটি এত সুন্দরভাবে লিখেছেন বুদ্ধদেব বসু, তোমরা পড়তে শুরু করলে থামতেই পারবে না। বলে রাখি, এই গল্পটি সংগ্রহ করা হয়েছে তোমাদের জন্য লেখা বুদ্ধদেব বসুর দুষ্প্রাপ্য একটি বই থেকে। বইটির নাম ‘রান্না থেকে কান্না’। বইটি প্রথম বেরিয়েছিল আজ থেকে ৫৫ বছর আগে, ১৯৫৬ সালে, কলকাতা থেকে। এটি যে এত আগের লেখা তোমাদের কিন্তু মনেই হবে না। আর একটি কথা, বানান কিন্তু পুরনো ধরনেই থাকল, যেমনটি লিখেছেন লেখক। ]

চলবে.....

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।