ঝড়ের রাতে জন্ম হয়েছিল বলে ছেলেটির নাম দেওয়া হয়েছিল ‘ঝাড়–’। ঝাড়–কে এই নামটা দিয়েছিল ঝাড়–র বাবা।
একবার খরায় জমিতে একদম ফসল হয়নি। এমনিতেই ঝাড়–দের ছিলো অভাব। তার উপর জমিতে ফলন না হওয়ায় তাদের উপর নেমে এলো সীমাহীন দুর্ভোগ।
এরই মধ্যে ঝাড়–র বাবাকে একদিন চেয়ারম্যান ডেকে বললেন, আমার ছেলে ঢাকায় থাকে। ওর বাসায় একটা কাজের ছেলে দরকার। তোমার তো অভাবের সংসার। তোমার ছেলে ঝাড়–কে দাও। আমার ছেলের সাথে থাকবে। ভালো খাবে। ঝাড়–র বাবা ভাবলো, ভালোই হবে। তবে ঝাড়–র মা ছিল পুরো বিপরীত। সে কিছুতেই ছেলেকে ছাড়বে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মা’র অনিচ্ছা সত্ত্বেও ঝাড়–কে ঢাকায় পাঠানো হলো।
ঢাকায় এসে কিছুদিন যেতে না যেতে ঝাড়–র কাজ বেড়েই চলছিল। তার কাজ যেন আর শেষ হয় না। সারাদিন হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রমের পর জুটতো অল্প কিছু খাবার। তারপরও কাজে একটু ভুল হলে ঝাড়–র ভাগ্যে জুটতো সীমাহীন অত্যাচার আর নির্যাতন। এতকিছুর পরও ঝাড়– তার স্বপ্নের কথা ভুলে যায়নি- তার অফিসার হওয়ার স্বপ্ন। কিন্তু ঝাড়–র প্রতি অত্যাচারের মাত্রা দিন দিন বাড়তেই থাকে। একদিন বাসা থেকে রাতের বেলায় পালিয়ে যায় ঝাড়–। রাতের অন্ধকার পথে ঝাড়– ছুটছে তো ছুটছেই।
পরদিন পত্রিকায় ঝাড়–র ছবি সম্বলিত একটি বিজ্ঞপ্তি ছাপা হলো। বিজ্ঞপ্তিটির ভাষা ছিল এরকম, এই ছেলেটি গতকাল রাতে কিছু টাকা-পয়সা চুরি করে পালিয়ে গেছে। যদি কেউ ছেলেটির সন্ধান দিতে পারেন তবে নিচের ঠিকানায়....
সেই পত্রিকার শেষ পৃষ্ঠায় ছোট করে আরো একটি খবর ছিল। খবরটির শিরোনাম ছিল : গতকাল রাজধানীতে তিনটি পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয় এক শিশুসহ তিনজন নিহত।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৪১৬ ঘণ্টা, ২১ জুন ২০১০
আবীর/এএ/এসআরজে