আচ্ছা তাহলে বলা যাক, নৌকা নিয়ে খুব নিরাপদেই সে হ্রদের একেবারে শেষ মাথায় গিয়ে পৌঁছে। নৌকাটিকে একটা গাছের সঙ্গে বাঁধে।
ছেলেটি শীতের পথে খালি পায়ে হাঁটতে থাকে। পথটা ঠাণ্ডা আর কাদায় মাখামাখি। কিন্তু ভেতরে ভেতরে সে সেঁকা পাঁউরুটির মতোই গরম। পকেটে টাকায় ঝুনঝুন শব্দ। দরকারি সবকিছু কিনতে পারবে কিনা ভালো মতো ভেবে দেখছে। নোরার জন্য একটা পুতুল কিনতে খুব ইচ্ছে করছে, কারণ সে জানে ওটা সে কতটা পছন্দ করবে!
পেগি তাকে যে খাবারগুলো দিয়েছিল তা সে সঙ্গে করে বয়ে এনেছে। গ্রামের একেবারে কাছাকাছি চলে আসার পর একটা গেটের সামনে বসে খেয়ে নেয়। তারপর আবারও হাঁটতে শুরু করে। একবার চিন্তাও করে না বাড়ি পালানো ছেলে-মেয়েদের একজন হিসেবে কেউ তাকে চিনতে পারবে, কারণ এতো দিনে নিশ্চয় লোকে তাদের কথা ভুলেই গেছে! তবে চারদিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখে যদি কেউ খুব কাছ থেকে তার দিকে তাকায়!
সে গ্রামের ভেতর ঢুকে পড়ে। বড় আর এলোমেলো একটা গ্রাম, মাঝ দিয়ে উঁচু আর সরু একটা সড়ক চলে গেছে। ওখানে মোট ছয়টা দোকান। জ্যাক দোকানগুলো ঘুরে দেখবে বলে এগিয়ে যায়। একেবারে শেষে ঢুকবে বলে খেলনা আর মিষ্টির দোকান পেছনে রেখে আসে। মাংসের দোকানে ঢুকে টার্কির দিকে তাকিয়ে থাকে, ওর কয়েকটাতে আবার লাল ফিতে বাঁধা। সে পর্দার দোকানে উঁকি দিয়ে দেখে এবং বড়দিন উপলক্ষে সুন্দর করে সাজাবার প্রশংসা করে। আবারও কেনাকাটা করতে পারছে বলে তার খুব ভালোলাগে।
তারপর সে খেলনার দোকানের কাছে আসে। খুব সুন্দর একটা দোকান! ওর জানালা দিয়ে পুতুলগুলো এমনভাবে হাত বাড়িয়ে রয়েছে যেন তারা লোকজনকে তাদের কিনে নেওয়ার অনুরোধ করছে। একটা রেলগাড়ি রেললাইন ধরে ছুটে চলছে। ব্যাগ হাতে পুঁচকে এক ক্রিসমাস ফাদার মাঝখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে। চকলেটের বাক্স, টফির টিন এবং রংবেরঙের মিষ্টির বড় বড় বোতলও দোকানটিতে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।
জ্যাক দাঁড়িয়ে দেখে, ভাবে নোরার জন্য ঠিক কোন পুতুলটা নেওয়া যায়। এরই মধ্যে সে পেগির জন্য সুন্দর আর ছোট্ট একটা কাজের বাক্স দেখে রেখেছে এবং মাইকের জন্য সে নৌকা নিয়ে লেখা একটা বই খুঁজে পায়। জানালার পেছনে লাল রঙের একটা বিস্কুটের প্যাকেটও দেখতে পায়, ভাবে নোরা পেলে খুব খুশি হবে। বড়দিনের দিন এসব নিয়ে গুহায় ঢুকলে আর সেখানে গিয়ে কাগজের টুপি পড়লে খুব মজা হবে!
চলবে…
বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৮
এএ