আমার একটা বিড়ালছানা আছে। খুবই সুন্দর।
আমি ছানাটিকে খাইয়ে দেই। শ্যাম্পো মাখিয়ে গোসল করিয়ে দেই। তার সাথে খেলা করি। রাতে একসাথে ঘুমাই। বিড়ালছানাটি আমাকে ছাড়া কিচ্ছু বুঝে না। আমিও তাকে ছাড়া কিচ্ছু বুঝি না। আমাদের মধ্যে ভীষণ ভাব।
আদরের ছানাটিকে তো আর ‘ছানা’ ‘ছানা’ বলে ডাকা যাবে না। ওর একটা সুন্দর নাম রাখা দরকার। অনেক চিন্তা করে ওর নাম রাখলাম ‘মেমে’। আমি ওর কানের কাছে মুখ রেখে ‘মেমে’ ‘মেমে’ বলে ডাকাডাকি করি। প্রথমে সে কিছুই বুঝতে পারত না। সে খুব বিরক্ত হতো। কিন্তু পরে সে আস্তে আস্তে বুঝতে পেরেছে ওর নাম যে ‘মেমে’। পরে ‘মেমে’ বলে ডাক দিলেই সে যেখানেই থাকে সেখান থেকে লেজ উচু করে দৌঁড়ে চলে আসে আমার কাছে।
আমি প্রতিদিন মেমের সাথে কথা বলি। তাকে কথা শেখাই। পড়া শেখাই। খেলা করি। এখন সে আমার অনেক কথাই বুঝে। সে সব সময় আমার সাথে সাথে থাকে। কি যে দুষ্টু হয়েছে ও। পড়তে গেলে, লিখতে গেলে সে খাতা, বই, কলম খামচে ধরে কামড়া কামড়ি করে। যখন তখন লাফিয়ে ওঠে কোলে। কম্পিউটারে কাজ করার সময় সে আমার সাথে কী বোর্ডে টিপাটিপি করে। ধমক দিলে শরীর ফুলিয়ে রাগ দেখায়। অভিমান করে। তখন আদর করে তার মান ভাঙ্গাতে হয়।
গত সপ্তাহে দাদু বাড়ি যাওয়ার সময় মেমেকে সাথে করে নিয়ে গেলাম। কেউ বলেছে, ‘ও মাইয়া, এইডা কি দেশি না বিদেশি বিলাই গো?’ বললাম এটা দেশি বিড়াল। কেউ আবার বলেন, ‘গেরামের বিলাই ভাত পায় না, শহর থেইকা কোলে কইরা বিলাই লইয়া আইছ? তোমার বিলাই কি ম্যাজিক দেহাইতে পারে?’
আমি বললাম, ‘না। না। ম্যাজিক দেখাতে পারে না। তবে ঢং ঢাং করতে পারে। ’
ওরা বলেন, ‘হ্যা। হ্যা। এইবার বুঝছি গো, এইডা অইল গিয়া রঙিলা ঢঙিলা বিলাই, নাহ্?’
আমি বললাম, ‘মেমে আমার বন্ধু। ’
৮ম শ্রেণী, শিবপুর শহীদ আসাদ কলেজিয়েট গার্লস হাই স্কুল, নরসিংদী