ভাইয়া আমার কথা শুনে চোখ কপালে তুলে বলল, তোর কল্পনাশক্তি তো দারুন প্রবল! তুই তোর স্বপ্ন নিয়ে একটা গল্প লিখে ফেল। তারপর সেইটা কোন গল্প প্রতিযোগিতায় পাঠিয়ে দে, ফাস্ট প্রাইজ পাবি, আমি শিওর!
তারপর জোরে জোরে হাসতে লাগল ।
ভাইয়া একটা ধমক দিয়ে আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলল, তুই এক নম্বর গুলবাজ। এটা আমার চেয়ে কেউ ভাল করে জানেনা। তারপর রাস্তার পাশের থেকে একটা কলার চামড়া পা দিয়ে ঠেলে এনে রাস্তার মাঝে রাখল ।
আমি কিছু না বুঝে জিজ্ঞেস করলাম, এটা কি?
ভাইয়া বলল, এটা দিয়ে এখন একটা মজা করব। একটু পর যখন রাস্তা দিয়ে কোন লোক যাবে তখন এই কলার চামড়ায় আছাড় খেয়ে ঠ্যাং ভাঙবে । ঠ্যাং ভেঙ্গে যাবে নানাভাই এর কাছে। কারণ ধারে কাছে ভাল ডাক্তার বলতে আছেন একমাত্র নানাভাই । আছাড় খেয়ে নানাভাই এর কাছে গেলে ওনার ও পেসেন্ট বাড়বে ।
আমি ভাইয়ার কথায় খুবই অনুপ্রাণিত হলাম। আসলেই এর মত ভাল আইডিয়া হয় না । এরপর আমি আর ভাইয়া রাস্তার পাশের স্ট্রিট ল্যাম্প এর পেছনে গিয়ে লুকালাম । কিছুক্ষণ পর আসলেই একটা লোক দেখা গেল । কাছাকাছি আসার পর আমরা যখন খুবই আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি তখন লোকটা দুর্ভাগ্যবশত আছাড় না খেয়ে কলার চামড়া দেখে ফেলল এবং আবার সেটা রাস্তার পাশে রেখে দিল।
ভাইয়া খুবই হতাশ হল কিন্তু তার অসীম ধৈর্য । সে আবার কলার চামড়া পা দিয়ে ঠেলে নিয়ে এলো। তারপর বলল, দেখিস কাল সকালের মধ্যে ঠ্যাং ভেঙ্গে কেউ না কেউ নানাভাই এর কাছে যাবে।
সন্ধ্যা হয়ে গেছে। তাই দুজনেই বাড়ি ফিরে এলাম। পরদিন সকাল বেলা ভাইয়ার সাথে হাঁটতে বেরিয়েছি। আগের দিনের কথা দুজনেরই কিছু মনে নেই। অনেকটা দূর আসার পর হঠাৎ ভাইয়ার চিৎকার শুনতে পেলাম। দেখলাম ভাইয়া রাস্তায় পড়ে আছে। তার পায়ের পাশে একটা কলার চামড়া । আর তখনই আমার মনে পড়ল যে ভাইয়া নিজেই কাল এটা রাস্তায় ফেলে রেখেছিল!
নানাভাই যখন ভাইয়ার পায়ে ব্যান্ডেজ করছিল আর ভাইয়া চিৎকার করছিল। তখন আমি বেশ ভাব নিয়ে বললাম, আমি যা বলি,শেষপর্যন্ত তাই হয়।
৭ম শ্রেণী, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা