ঢাকা: দেশের সব হোটেল, মোটেল ও রেঁস্তোরায় একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার ও উপকূলীয় অঞ্চলে পলিথিন-প্লাস্টিকের ব্যাগ বহন, বিক্রয়, ব্যবহার, বিপণন বন্ধের ব্যর্থতার অভিযোগ এনে সরকারকে আদালত অবমাননার নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ প্লাস্টিক প্রস্তুত ও আমদানি সমিতির চেয়ারম্যানকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এ নোটিশ পাঠিয়েছে।
পরে এক বিজ্ঞপ্তিতে বেলা জানিয়েছে, প্লাস্টিক দূষণরোধে আদালতের আদেশ যথাযথভাবে প্রতিপালন করে দেশের সব হোটেল, মোটেল ও রেঁস্তোরায় একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার ও উপকূলীয় অঞ্চলে পলিথিন/ প্লাস্টিকের ব্যাগ বহন, বিক্রয়, ব্যবহার, বিপণন বন্ধ করতে অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
এর আগে, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও ১০টি সমমনা বেসরকারি সংস্থা- এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও), ঢাকা পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), অ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (এসিডি), বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (বিআইডিএস), ইনিশিয়েটিভ ফর রাইট ভিউ (আইআরভি), রিচ টু আনরিচড (আরইউএন), সেভ দ্যা কোস্টাল পিপল (এসসিওপিই), সেবা ফাউন্ডেশন, সেল হেল্প অ্যান্ড অ্যাডভান্স ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (এসএইএডিও), ইয়্যুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস) দেশে ক্ষতিকর প্লাস্টিকের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধে পলিথিন/প্লাস্টিক ব্যাগের উপর বিদ্যমান আইনি নিষেধাজ্ঞা কার্যকর ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধের হাইকোর্ট ২০১৯ সালে রিট দায়ের করে।
মামলার প্রাথমিক শুনানি শেষে ২০২০ সালের ৬ জানুয়ারি হাইকোর্ট বিভাগ পলিথিন/প্লাস্টিক ব্যাগের উপর বিদ্যমান আইনি নিষেধাজ্ঞা কার্যকর এবং পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ধারা ৬ক বিধান অনুযায়ী একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ও আইনি কার্যকারিতাবিহীন ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। জারিকৃত রুলে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে এবং এসবের নিরাপদ বিকল্প চালু করার জন্য কেন একটি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চেয়েছিলেন আদালত। একইসঙ্গে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় আদালত দেশব্যাপী নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ, কারখানা বন্ধ এবং যন্ত্রপাতি জব্দকরণের মাধ্যমে পলিথিন/প্লাস্টিক ব্যাগের উপর বিদ্যমান আইনি নিষেধাজ্ঞার পূর্ণ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে বিবাদীদেরকে নির্দেশ দেন। এছাড়াও এক বছরের মধ্যে দেশের সব হোটেল, মোটেল ও রেস্তোরায় একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার নিষিদ্ধ ও সব উপকূলীয় অঞ্চলে পলিথিন/প্লাস্টিকের ব্যাগ বহন, বিক্রয়, ব্যবহার, বিপণন নিষিদ্ধ করতে বিবাদীদের হাইকোর্ট নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দিষ্ট সময়সীমা অতিক্রান্ত হলেও নির্দেশ অনুযায়ী দেশের হোটেল, মোটেল ও রেস্তোরায় একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার বন্ধ হয়নি। বন্ধ হয়নি উপকূলীয় অঞ্চলে পলিথিন/প্লাস্টিকের ব্যাগ বহন, বিক্রয়, বিপণন ও ব্যবহার।
তাই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বেলা।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৩
ইএস/এসএ