ঢাকা: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের (জি এম কাদের) দায়িত্ব পালন নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়েছে।
রোববার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন মামলার বাদী জিয়াউল হক মৃধার আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা।
বৃহস্পতিবার এ তথ্য দেন তিনি। এর আগে বুধবার আবেদনটি করার জন্য চেম্বার আদালতের অনুমতি নেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের আবেদন খারিজ করে আদেশ দেন ঢাকার জেলা জজ এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া।
এর ফলে দলের চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরের ওপর নিষেধাজ্ঞার আদেশ বহাল থাকে।
এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন জি এম কাদের। গত ৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞার আদেশ স্থগিত করে রুল জারি করেন। ফলে জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালনে আইনগত বাধা নেই বলে জানান তার আইনজীবী।
এবার হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন মামলার বাদী।
গত ৪ অক্টোবর জাপা থেকে বহিষ্কৃত নেতা দলটির সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা এ মামলা করেন। বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩১ অক্টোবর ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ মাসুদুল হক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরের দলীয় যাবতীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞার অস্থায়ী আদেশ দেন।
সেই আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে একই আদালতে আবেদন করেন জি এম কাদের। গত ১৬ নভেম্বর সেই আবেদন খারিজ করেন আদালত।
সেই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন করেন জি এম কাদেরের আইনজীবীরা। তবে জেলা জজ আদালতে শুনানি দেরি হওয়ায় উচ্চ আদালতে যান জি এম কাদেরের আইনজীবীরা। তবে গত ২৯ নভেম্বর হাইকোর্ট ও পর দিন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত সেই আদেশ বহাল রেখে জেলা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন শুনানির আদেশ দেন।
এরপর গত ১১ জানুয়ারি জেলা জজ আদালতে সেই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত আদেশের জন্য আজকের দিন রাখেন। আজ আদালত রিভিশন আবেদন খারিজ করে দেন।
একই কারণ দেখিয়ে মশিউর রহমান রাঙ্গা গত ৩ অক্টোবর জি এম কাদেরসহ চারজনের নামে আরেকটি মামলা করেন।
দুটি মামলার আরজিতে বলা হয়, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। এরপর বিবাদী জি এম কাদের হাইকোর্ট বিভাগের একটি রিট মামলা বিচারাধীন থাকার পরও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ওই বছরের ২৮ ডিসেম্বর কাউন্সিল করে নিজেকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেন।
এরপর গত ৫ মার্চ গাজীপুর মহানগর কমিটির উপদেষ্টা আতাউর রহমান সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুর শিকদার, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক রফিকুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. মো. আজিজকে বহিষ্কার করেন। এছাড়া গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাদী মশিউর রহমান রাঙ্গাকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করেন। অন্যদিকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধাকেও জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করেন।
তাই ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বরের কাউন্সিলসহ চলতি বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বহিষ্কার আদেশ অবৈধ ঘোষণা করতে এবং হাইকোর্ট বিভাগের রিট ১৫০৫১/২০১৯ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় পার্টির পরবর্তী কাউন্সিল স্থগিত রাখতে মামলায় আদেশ চাওয়া হয়েছে। এছাড়া অবৈধ কাউন্সিলের মাধ্যমে জি এম কাদেরের নিজেকে চেয়ারম্যান ঘোষণার সিদ্ধান্ত বাতিল চাওয়া হয় মামলায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২৩
ইএস/এসএএইচ