ঢাকা, রবিবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

শিশুপুত্রকে হত্যার দায়ের মায়ের যাবজ্জীবন 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২৩
শিশুপুত্রকে হত্যার দায়ের মায়ের যাবজ্জীবন 

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে নিজের তিন বছর তিন মাস বয়সী আয়ানুর রহমান আয়ানকে গলাকেটে হত্যার দায়ে মা সাবিনা ইয়াছমিন শিল্পীকে (২৮) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। রায়ের পর সাবিনাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে তিনি কারাগারে রয়েছেন।  

জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত সাবিনা সদর উপজেলার পার্বতীনগর ইউনিয়নের মতলবপুর গ্রামের মৃত ছেরাজুল হকের মেয়ে।  


মামলার এজাহার ও আদালত সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের দিকে লাহারকান্দি ইউনিয়নের চাঁদখালী গ্রামের মো. হুমায়ুন কবিরের ছেলে আজিমুর রহমান আজিমের সঙ্গে সাবিনা ইয়াছমিন শিল্পীর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছরের মাথায় আজিম সৌদি আরবে চলে যান। তাদের ঘরে আয়ানুর রহমান আয়ান নামে একটি শিশুপুত্রের জন্ম হয়। সাবিনা ছেলেকে নিয়ে তার শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে লাহারকান্দি ইউনিয়নের চাঁদখালী গ্রামের হারুন খাঁর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। প্রবাসী স্বামী আজিমের সঙ্গে পারিবারিক নানা কারণে ঝগড়া হতো সাবিনার। ২০২১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর মোবাইল ফোনে সাবিনার সঙ্গে আজিমের ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে সাবিনাকে তালাক দেওয়ার হুমকি দেন আজিম। এতে স্বামীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওই রাতেই সাবিনা ধারালো বটি দিয়ে তার ঘুমন্ত শিশুপুত্রকে গলা কেটে হত্যা করেন। পরে তিনিও ফ্যানের সঙ্গে কাপড় বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পাশের কক্ষে তার শ্বশুর-শাশুড়ি ছিলেন। তারা শব্দ পেয়ে সাবিনার কক্ষে উঁকি দিয়ে দেখতে পান, সাবিনা আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন। এরপর তারা দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে বিছানায় আয়ানের রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখতে পান।  

খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় এবং আর সাবিনাকে আটক করে।  

পরদিন শিশুটির দাদা মো. হুমায়ূন কবির বাদী হয়ে পুত্রবধূ সাবিনা ইয়াছমিন শিল্পীকে আসামি করে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।  

মামলাটি তদন্ত করেন সদর থানার সেই সময়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সোহেল মিয়া। সাবিনা ছেলেকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।  

২০২২ সালের ২ অক্টোবর সাবিনাকে অভিযুক্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেন তদন্ত কর্মকর্তা।  

শুনানি শেষে ঘটনার দেড় বছরের মধ্যে বৃহস্পতিবার এ রায় দিলেন আদালত।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০২৩
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।