ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

পলাতকদের আইনি লড়াইয়ের সুযোগ নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২৩
পলাতকদের আইনি লড়াইয়ের সুযোগ নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল

ঢাকা: আইনে পলাতক ব্যক্তির আশ্রয় লাভের কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের পক্ষে আইনি লড়াই করতে আইনজীবীর আবেদন নিয়ে এক প্রশ্নে এমন মন্তব্য করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

সোমবার (১০ এপ্রিল) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এর আগে করোনাভাইরাসের সময় দেশের বাইরে থেকে দুজন আগাম জামিন আবেদন করেছিলেন। তখন আদালত কিন্তু সে দুজনের আবেদন খারিজই শুধু করেননি, তাদের জরিমানাও করেছিলেন। এছাড়া একজন আইনজীবী এরকম একটা (সারেন্ডার না করা) মামলা করেছিলেন, হাইকোর্ট কিন্তু একপর্যায়ে ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছিলেন।

তিনি বলেন, আমাদের সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন রায়ে বিভিন্ন সময় এটা পরিষ্কার করে দেয়া হয়েছে, পলাতক ব্যক্তির আইনে আশ্রয় লাভের কোনো সুযোগ নেই। কোনো মামলায় আদালতে হাজির না হয়ে কেউ কোনো ধরনের সাবমিশন রাখাতে পারেন না। উনারা (তারেক-জোবায়দা) পলাতক হলে সাবমিশন রাখার সুযোগ পাবেন না।

গত বছরের ২৬ জুন হাইকোর্ট ৪ কোটি ৮২ লাখ টাকার দুর্নীতি মামলা দায়ের ও তার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে করা আবেদন খারিজ করে দেন।

রিট খারিজ করে দেওয়া রায়ে হাইকোর্ট একইসঙ্গে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দায়ের করা এ মামলার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে সংশ্লিষ্ট নিম্ন আদালতকে যত দ্রুত সম্ভব বিচার কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশ দেন। এছাড়া ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে এ রায় পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে মামলার রেকর্ড ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে পাঠাতে বলা হয়।

ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক। মামলায় তারেক রহমান, জোবায়দা রহমান ও তার মা অর্থাৎ তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়।

২০০৮ সালে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দাখিল করা হয়। এরপরই মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জোবায়দা। ওই বছরই এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।

গত ১ নভেম্বর একই আদালত তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পত্র আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর গত ৫ জানুয়ারি তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেন।

এতেও তারা হাজির না হওয়ায় ১৯ জানুয়ারি তাদের আদালতে হাজিরে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর গত ৩১ জানুয়ারি বিজি প্রেস থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এবার তাদের অনুপস্থিতেই অভিযোগ গঠন শুনানির এ দিন ধার্য করা হয়।

গত ২৯ মার্চ ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে চার্জ শুনানির দিন ধার্য ছিল।

এ দিন তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমানের পক্ষে মাসুদ আহমেদ তালুকদার আইনজীবী নিয়োগের বিষয়ে শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে আইনজীবী হিসেবে চার্জগঠন শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে চান।

তবে দুদকের পক্ষের আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম বিরোধিতা করে বলেন, আসামি পলাতক থাকলে আইনজীবী নিয়োগের কোনো সুযোগ নেই।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ৯ এপ্রিল আইনজীবী নিয়োগ বিষয়ে অধিকতর শুনানি ও চার্জশুনানির পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।

৯ এপ্রিল তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের পক্ষে আইনজীবী থাকবে কি না এ বিষয়ে আদেশ ও অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশের জন্য ১৩ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২৩
ইএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।