ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

লক্ষ্মীপুরে স্ত্রী হত্যা দায়ে স্বামীর ১০ বছরের সাজা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২৩
লক্ষ্মীপুরে স্ত্রী হত্যা দায়ে স্বামীর ১০ বছরের সাজা

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের বশিকপুরে লামিয়া আক্তার ঐশী নামে এক গৃহবধূকে হত্যার দায়ে তার স্বামী আরমান হোসাইন ওরফে আরিফকে (৩০) ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

 

বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। রায়ের সময় আসামি আরিফ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালত তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে তিনি জামিনে ছিলেন।  

জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্র জানায়, জেলার সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের পশ্চিম শেরপুর গ্রামের চৌকিদার বাড়ির মৃত আমির হোসেনের ছেলে আরমান হোসাইন আরিফের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের জেরে বিয়ে হয় একই উপজেলার জাহানাবাদ গ্রামের হাসান আহম্মেদের মেয়ে লামিয়া আক্তার ঐশীর। ২০১৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর তারা নিজেরা বিয়ে করেন।
  
বিয়ের পর থেকে ঐশীকে নিয়ে অন্য ছেলের সঙ্গে পরকীয়ার সন্দেহ করেন আরিফ। ঐশী মোবাইল ফোনে অন্য পুরুষের সঙ্গে কথা বলতেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই কথা কাটাকাটি হত। আরিফ অন্য ছেলেদের সঙ্গে ঐশীকে কথা বলতে নিষেধ করলেও সে শুনতো না। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় ঐশীকে মারধর করতেন আরিফ। এতে ঐশী একদিন আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন। তবে বাড়ির লোকজন তাকে রক্ষা করেন। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে আরিফ ঐশীকে মারধর করে গলা চেপে ধরেন। এতে সে অজ্ঞান হয়ে পড়লে আরিফ তাকে একটি অটোরিকশায় করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় ঐশী।  

পরে মরদেহ বাড়িতে এনে নিজ বসতঘরে রেখে পালিয়ে যায়। এসময় আরিফের অন্য স্বজনরাও গা-ঢাকা দেয়। আরিফ তার শাশুড়ি সুফিয়া আক্তারকে ঐশীর অসুস্থতার কথা জানালে সুফিয়া এসে তার মেয়ের মরদেহ ঘরে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। ১ অক্টোবর সুফিয়া আক্তার চন্দ্রগঞ্জ থানায় জামাতা আরমান হোসাইন আরিফ ও ঐশীর ভাসুর মো. সফিক এবং ননদ জেসমিন আক্তারকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।  

পুলিশ ২০১৯ সালের ১০ জুলাই আসামি আরিফকে গ্রেফতার করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আরিফ ঐশীকে পরকীয়ার জেরে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে আদালতে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।  

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও চন্দ্রগঞ্জ থানার সেই সময়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মজিবুর রহমান ঐশীর স্বামী আরমান হোসাইন আরিফকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেন। মামলার অন্য দুই আসামি আরিফের ভাই সফিক ও বোন জেসমিন আক্তারকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন।  

আদালত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আরমান হোসাইন আরিফের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।