ঢাকা, শনিবার, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আদালত চত্বরকে ‘সংরক্ষিত এলাকা’ ঘোষণার আবেদন 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৩ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৩
জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আদালত চত্বরকে ‘সংরক্ষিত এলাকা’ ঘোষণার আবেদন 

ঢাকা: সুপ্রিম কোর্টসহ সারাদেশের আদালত চত্বরে ফলদ গাছের কাঁচা ফল সংগ্রহে বিধিনিষেধ আরোপ করে পশু-পাখিদের প্রাকৃতিক খাদ্যচক্রের নিশ্চয়তায় পদক্ষেপ গ্রহণে প্রধান বিচারপতি বরাবর আবেদন করা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এস এম আরিফ মন্ডল সোমবার (১৫ মে) এ আবেদন করেন।

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো আবেদনের অনুলিপি আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক সচিব, পরিবেশ সচিব, হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) বরাবরে দেওয়া হয়েছে।

আবেদনে আইনজীবী এস এম আরিফ মন্ডল বলেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণসহ বাংলাদেশের সমস্ত আদালত চত্বরে বিভিন্ন ফলদ গাছ রয়েছে। ঋতু বিশেষে ফুলে-ফলে আদালত চত্বরে সুগন্ধ বিরাজ করে। গাছে গাছে ফুল ফোটার পর থেকে ফল পাকা অব্ধি বুলবুলি, টিয়া, কাক, শালিক, দোয়েলসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের আনাগোনা বেড়ে যায়। আর বানর, কাঠবিড়ালী, বাদুর, শিয়ালের মতো পশুরা আদালত চত্বরে পাকা ফলের সুমিষ্ট গন্ধে গাছের আশপাশে বিচরণ করতে থাকে। আর এভাবেই দিনের পর দিন পশু-পাখিরা ফলগুলো পাকার অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকে। সপ্তাহের বিচারিক কার্যক্রম চলাকালীন দিনগুলোতে বিচারপ্রার্থী আইনজীবী ও বিচার সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের পদচারণার কারণে গাছে গাছে পাখিদের কিচিরমিচির সীমিত থাকে। কিন্তু রাত হলেই নির্জন আদালত চত্বরে পশু-পাখিরা তাদের স্বাভাবিক প্রাকৃতিক পরিবেশ ফিরে পায়। এভাবেই আদালত চত্বরের গাছে বসবাসকারী পশু-পাখিদের জীবনচক্র চলতে থাকে। পশু-পাখিরা সাধারণত পাকা ফল খেয়ে জীবনধারণ করে। অনেক সময় দেখা যায় চত্বরে গাছের কাঁচা ফলগুলো আদালতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঠিক তত্ত্বাবধানের অভাবে রাত্রিবেলা হারিয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে আদালত প্রাঙ্গণে উন্মুক্তভাবে বেড়ে ওঠা পশু-পাখিগুলো তাদের ন্যায্য প্রাকৃতিক খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং তাদের খাদ্যচক্রের ব্যাঘাত ঘটছে।

আবেদনে আরও বলা হয়, জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আদালত চত্বরে গাছের ফলমূলগুলো সংশ্লিষ্ট পশু-পাখিরা যাতে একচ্ছত্রভাবে খাবার হিসেবে খেতে পারে তা নিশ্চিত করা আমাদেরই দায়িত্ব।  

আইনজীবী আরিফ মন্ডল আবেদনে বলেন, জীববৈচিত্র্য রক্ষণাবেক্ষণে আদালত চত্বরকে ‘সংরক্ষিত এলাকা’ বা ‘বিশেষ এলাকা’ ঘোষণা করা অতি জরুরি হয়ে পড়েছে।  

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার এবং জেলা জজ আদালতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচাররা আদালত চত্বরে গাছের পাকা ফল প্রাকৃতিকভাবে পশু-পাখিরা যাতে খেতে পারে তা সঠিকভাবে তদারকি করতে হবে। এর ফলে এ চত্বর সংশ্লিষ্ট প্রাণীদের খাদ্যচক্রে কিছু অংশে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।

এতে আরও বলা হয়, সঠিক সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে আদালত চত্বরকে প্রাকৃতিক পরিবেশবান্ধব চত্বর ঘোষণার লক্ষ্যে আদালত প্রাঙ্গণের ফলাদি গাছেই সংরক্ষণপূর্বক পশু-পাখিদের খাদ্যচক্র নিশ্চয়তার সঠিক নির্দেশনা আবশ্যক।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৩
ইএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।