ঢাকা, শনিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

জয়পুরহাটে হত্যা মামলায় এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড, বাদীর ৫ বছরের জেল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৮ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২৩
জয়পুরহাটে হত্যা মামলায় এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড, বাদীর ৫ বছরের জেল

জয়পুরহাট: জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলায় আলম খাঁ হত্যা মামলায় শাহীন নামে এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।  

এছাড়া মামলাটির বাদী আঞ্জুয়ারাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সেই সঙ্গে বাদীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (৩১ মে) দুপুরে জয়পুরহাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. আব্বাস উদ্দীন এ রায় দেন।

শাহীন ক্ষেতলাল উপজেলার মহব্বতপুর গ্রামের বাসিন্দা। আঞ্জুয়ারা (৪৫) একই গ্রামের নিহত আলম খাঁর স্ত্রী।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, আলমের কাছ থেকে সাত হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন প্রতিবেশী শাহীন। কিন্তু এরপর আর সেই টাকা পরিশোধ না করায় দুজনের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এজন্য আলম ২০০৬ সালের ১৭ মে ক্ষেতলাল থানায় শাহীনের নামে সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন শাহীন। এরপর ২০০৬ সালের ২০ মে রাতে আলমকে ধারের টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান শাহীন। সেখানে লোকজন নিয়ে তিনি আলমকে মারধর করেন এবং গলাটিপে ধরেন। এতে আলম অসুস্থ হয়ে পড়েন। এদিকে পেটানোর খবর পেয়ে আলমের স্ত্রী শাহীনের বাড়ি গিয়ে দেখেন, শাহীনসহ কয়েকজন আলমের মাথায় পানি ঢালছেন আর আলমের মুখ ‍দিয়ে ফেনা বের হচ্ছে। এ অবস্থায় দ্রুত তাকে উদ্ধার করে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

প্রথমে এ ঘটনায় জয়পুরহাট সদর থানায় একটি ইউডি মামলা হয়। এ কারণে আলম খাঁর স্ত্রীর করা হত্যা মামলা নেয়নি পুলিশ। পরে আলমের মৃত্যুর কারণ জানতে রাসায়নিক পরীক্ষা করা হয়। ২০০৬ সালের ৩১ অক্টোবর রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আসে। আলমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এ ঘটনায় ২০০৬ সালের ২৬ নভেম্বর আলমের স্ত্রী আঞ্জুয়ারা বাদী হয়ে ছয়জনের নামে জয়পুরহাট থানায় মামলা দায়ের করেন।

২০০৭ সালে আসামিদের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল পুলিশ।  

দীর্ঘ শুনানি শেষে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় শাহীনকে মৃত্যুদণ্ড ও আর্থিক দণ্ড দেন আদালত। আর অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় বাকি আসামিদের খালাস দেওয়া হয়।  

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন জয়পুরহাট জেলা ও জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল। তিনি জানান, মামলা চলাকালে বাদী আসামিপক্ষের সঙ্গে টাকার বিনিময়ে আপসরফা করেন। কিন্তু আদালতে সেই তথ্য গোপন করে মিথ্যা সাক্ষী দেন। এজন্য আদালত আঞ্জুয়ারা বেগমকেও কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেন।

আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান, অ্যাডভোকেট পবন কুমার আগারওয়ালা ও অ্যাডভোকেট আহসান হাবিব সরকার।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২৩

এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।