ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা: প্রেমিকের ফাঁসি, ৩ জনের যাবজ্জীবন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪১ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০২৩
স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা: প্রেমিকের ফাঁসি, ৩ জনের যাবজ্জীবন

শরীয়তপুর: শরীয়তপুরের ডামুড্যায় আলোচিত ৮ম শ্রেণির ছাত্রী কাজল আক্তারকে (১৪) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় প্রেমিকের ফাঁসি ও অপর তিন আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে দুই লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

 

বুধবার (৭ জুন) দুপুর ২টায় শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক স্বপন কুমার সরকার এ রায় ঘোষণা করেন।  

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন- ডামুড্যা উপজেলার বড় নওগাঁ গ্রামের তাজুল ইসলাম চৌকিদারের ছেলে বাবু চৌকিদার (২৫)।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- একই গ্রামের আজগর আলী খানের ছেলে জুয়েল খান (১৯), বাচ্চু সরদারের ছেলে ফারুক সরদার (২৪) ও চরবয়রা গ্রামের বাদশা মিয়া সরদারের ছেলে তানভীর হোসেন শামীম (২৪)।  

মামলার অভিযোগপত্র ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ডামুড্যা উপজেলার কুলকুরি গ্রামের মুরগি ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন ছৈয়ালের ৮ম শ্রেণিতে পড়ুয়া কিশোরী মেয়ে কাজল আক্তারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল আসামি বাবু চৌকিদারের। সেই সুবাদে একাধিকবার শারীরিক মেলামেশাও করে তারা। এক পর্যায়ে কাজল আক্তার বাবুকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। কিন্তু বাবু কাজলকে বিয়ে করতে রাজি হয়নি।  

এরই জেরে ২০২০ সালের ২১ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাবু চৌকিদার পরিকল্পিতভাবে কাজলকে ফোন করে বাড়ির পাশের বাগানে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে বাবুর সহযোগী জুয়েল খান, ফারুক সরদার ও তানভীর হোসেন শামীমও স্কুলছাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করতে উদ্যত হয়। এসময় কাজল ডাক-চিৎকার দিলে তারা সবাই মিলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মরদেহ খালে ফেলে দেয়। পরদিন (২২ অক্টোবর) সকালে বাড়ি থেকে একশ গজ দূরে খাল থেকে কাজলের হাত-পা ও মুখ বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।  

এ ঘটনায় ওই দিনই কাজলের বাবা আলাউদ্দিন ছৈয়াল বাদী হয়ে ডামুড্যা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পরপরই পুলিশ বাবু চৌকিদার, জুয়েল খান, ফারুক সরদার ও তানভীর হোসেন শামীমকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে তানভীর হোসেন শামীম ছাড়া বাকি তিন আসামি প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।  

মামলা তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। ২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর আদালত চার্জ গঠন করে বিচার কাজ শুরু করে। ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ (৭ জুন) দুপুরে মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত।  

এদিকে, রায়ে বাদী পক্ষ সন্তুষ্ট হলেও আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন আসামি পক্ষ।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহমেদ বলেন, স্কুলছাত্রী কাজল ধর্ষণ ও হত্যা মামলা একটি আলোচিত ঘটনা। আসামিদের সাজা দিয়ে আদালত দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট।  

তবে অসন্তুষ্ট আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহ আলম বলেন, আসামি পক্ষ এ রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০২৩
এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।