ঢাকা, শনিবার, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

জাহাঙ্গীরের বরখাস্ত নিয়ে রুল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৯ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২৩
জাহাঙ্গীরের বরখাস্ত নিয়ে রুল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি

ঢাকা: গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের বৈধতা নিয়ে জারি করা রুল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

রোববার (১৮ জুন) বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

এ সময় জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।

পরে তার আইজীবী সাজ্জাদ উল ইসলাম জানান, হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেছেন। মামলাটি নিষ্পত্তি করেছেন এই মর্মে, যথাযথ আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণপূর্বক সামযিক বরখাস্ত করা হয়নি। এখন পূর্ণাঙ্গ রায় পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী বলেন, সাময়িক বরখাস্ত যথাযথ বা আইনসম্মত হয়েছে কিনা, সেটা পূর্ণাঙ্গ রায় পেলে জানা যাবে।

আর জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, জনগণের কাছে জবাবদিহিতার জন্য আদালতে এসেছি। আমার মা এখন গাজীপুরের নির্বাচিত মেয়র। এ রায় ভবিষ্যতের জন্য মঙ্গলজনক। মানুষ যেন আমাকে ভুল না বোঝে।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গোপনে ধারণ করা মেয়র জাহাঙ্গীরের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ১৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

এরপর বিভিন্ন অভিযোগে ২৫ নভেম্বর তাকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ জহিরুল ইসলামের সই করা এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয়।

পরে গত বছরের ১৪ আগস্ট রিট করেন জাহাঙ্গীর আলম। ওই রিটের শুনানি নিয়ে ২৩ আগস্ট রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এলজিআরডি সচিব, উপ-সচিব, আইন সচিব ও গাজীপুর জেলা প্রশাসককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে ক্ষমা করেছে তার দল। গত ১ জানুয়ারি দলীয় সাধারণ সম্পাদকের দেওয়া এক চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বার্থ, আদর্শ, শৃঙ্খলা তথা গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার জন্য ইতোপূর্বে আপনাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার/অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এতে আরও বলা হয়, আপনার বিরুদ্ধে আনা সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ স্বীকার করে আপনি আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন এবং ভবিষ্যতে সংগঠনের গঠনতন্ত্র, নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কোনো কার্যকলাপে সম্পৃক্ত হবেন না মর্মে লিখিত অঙ্গীকার করেছেন।

এ অবস্থায়, গত ১৭ ডিসেম্বর গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংগঠনের গঠনতন্ত্রের ১৭ (৬) এবং ৪৭ (২) ধারা মোতাবেক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কাছে সাধারণ ক্ষমা প্রার্থনা করে আপনার পাঠানো লিখিত আবেদন পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থী কর্মকাণ্ড ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে আপনার প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করা হলো।

গত ১৫ মার্চ এ রুলের শুনানি শুরু হয়েছিল। ২৮ মার্চ শুনানি শেষে এ বিষয়ে রায়ের জন্য ৩০ মার্চ দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।  কিন্তু রায় ঘোষণা কয়েকদফা পেছানো হয়। এর মধ্যে তফসিল ঘোষণা হলে মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। তবে বাছাই শেষে ঋণ খেলাপের অভিযোগে মনোনপত্র বাতিল করা হয়। তিনি হাইকোর্টে রিট করেও মনোনয়ন ফিরে পাননি।

পরে ১৫ মে তাকে আজীবনের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এদিকে স্বতন্ত্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তার মা জায়েদা খাতুন মেয়র নির্বাচিত হন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৭ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২৩
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।