নড়াইল: নড়াইলে স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) দুপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. আকরাম হোসেন এ দণ্ডাদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম আমেনা খাতুন (৩৫)। তিনি কালিয়া উপজেলার আমতলা গ্রামের মৃত ছিদ্দিক ফকিরের মেয়ে। তবে আমেনা খাতুন জামিনে বের হয়ে পলাতক থাকায় তার অনুপস্থিতিতেই আদালত এ রায় দেন।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১৪ বছর আগে কালিয়া উপজেলার আমতলা গ্রামের মৃত ছিদ্দিক ফকিরের মেয়ের সঙ্গে একই উপজেলার ফুলদাহ গ্রামের মো. সবুর শেখের ছেলে ইবাদুল শেখের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান জন্ম লাভ করে। ইবাদুল পেশায় ভ্যানচালক হওয়ায় সংসারে অভাব অনটন নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায় ঝগড়া লেগে থাকতো।
এ কারণে স্ত্রী আমেনা খাতুন প্রায় তার বাবার বাড়িতে চলে যেতেন। সর্বশেষ সাংসারিক অশান্তির কারণে ২০২০ সালের ৯ মে আমেনা খাতুন তার বাবার বাড়িতে চলে যায়। রাতে ইবাদুল তার স্ত্রীকে ফেরত আনতে শ্বশুরবাড়ি আমতলা গ্রামে যায়। পরের দিন সকালে ইবাদুলের বাবা ফোনের মাধ্যমে জানতে পারে তার ছেলে আত্মহত্যা করেছে।
সংবাদ পেয়ে ইবাদুলের বাবা সবুর শেখ কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে আমতলা গ্রামে গিয়ে দেখতে পায় ইবাদুল বাড়ির পাশের বাঁশের সঙ্গে গামছা প্যাঁচানো অবস্থায় আছে। পরে সংবাদ দিলে পুলিশ একটি অপমৃত্যূর মামলা করে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠায়।
পরবর্তীতে মামলাটি পিবিআই তদন্তকালে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমেনা খাতুন পুলিশের কাছে স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে তোলা হলে সেখানেও আমেনা খাতুন নিজের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। পিবিআই তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আমেনা খাতুনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
এদিকে বিচারিক প্রক্রিয়া চলার সময় আসামি আমেনা খাতুন আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে কিছুদিন পরে পালিয়ে যায়। ফলে তার অনুপস্থিতিতেই মোট ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামি আমেনা খাতুনের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতিতভাবে প্রমাণ হওয়ায় আদালত এ রায় প্রদান করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২৩
জেএইচ