ঢাকা, শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

আইন ও আদালত

ওসমানীনগরে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হত্যায় প্রভাষকের মৃত্যুদণ্ড 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২৩
ওসমানীনগরে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হত্যায় প্রভাষকের মৃত্যুদণ্ড 

সিলেট: সিলেটের ওসমানীনগরে আলোচিত মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা শায়েখুল ইসলাম হত্যা মামলার আসামি লুৎফুর রহমানকে (৪৬) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

 

সোমবার (৩০ অক্টোবর) সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন।  

আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
 
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত লুৎফুর রহমান সিলেটের দক্ষিণ সুরমার ফরিদপুর গ্রামের মৃত তাহির আলীর ছেলে।  

মামলার বরাত দিয়ে আদালত সূত্র জানায়, সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার অনন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা শায়েখুল ইসলাম। তিনি সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার তীলপাড়া শেখ ফজিলতুন্নেছা ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ ছিলেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি লুৎফুর রহমানও একই মাদরাসার বাংলা বিভাগের প্রভাষক ছিলেন।  

২০২৫ সালে কর্তব্য অবহেলা, অসদাচরণ ও ঔদ্বত্যপূর্ণ আচরণের জন্য আইনি পদক্ষেপ নেন অধ্যক্ষ মাওলানা শায়খুল ইসলাম। উপরন্তু অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে সিলেটের বালাগঞ্জ সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে মামলা (নং-২২/২০১৫) দায়ের করেন প্রভাষক লুৎফুর রহমান। একপর্যায়ে অসদাচরণ না করার অঙ্গীকার করে ফের চাকরিতে যোগ দেন লুৎফুর। কিন্তু তার আচরণের কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। বিষয়টি মাদরাসার পরিচালনা পর্ষদকে জানান অধ্যক্ষ। এরপর ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে মাদরাসা পরিচালনা পর্ষদের সামনে অধ্যক্ষের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে হত্যার হুমকি দেন লুৎফুর।

ঘটনার ২ দিনের মাথায় ১৪ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাওলানা শায়েখুল ইসলাম ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার বাসা থেকে মাদরাসায় রওয়ানা হন। সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে উপজেলার বুরুঙ্গা নিজে প্রাইভেটকার (নং-সিলেট-খ-১১-০০৫৪) চালিয়ে সঙ্গীয়দের নিয়ে শায়েখুল ইসলামের মোটরসাইকেলে সজোরে ধাক্কা দিয়ে হত্যা করেন। দুর্ঘটনা ঘটিয়ে দ্রুত যাওয়ার সময় প্রাইভেটকারটি উল্টে যায়। এ সময় সঙ্গীয়রা পালিয়ে গেলেও লুৎফুর রহমানকে আটক করে জনতা পুলিশে সোপর্দ করেন।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী দিলবাহার তালুকদার লিপি বাদী হয়ে ওসমানীনগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আমিনুল ইসলাম তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (নং-০৪/২০২০) দাখিল করেন। ওপর আসামি আহমদ আলী হেলালীকে অভিযোগপত্র থেকে অব্যহতির আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।  

মামলাটি আদালতে বিচারের জন্য দায়রা ৩৫৩/২২ মূলে বিচারের জন্য রেকর্ড করা হয়। একই বছরের ১১ আগস্ট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর বিচার শুরু হয়। দীর্ঘ শুনানিতে ৪৭ সাক্ষীর মধ্যে ৩০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।  

আসামি পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন পিপি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২৩
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।