ঢাকা: নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালতে নথি দেখে সাক্ষ্য দেওয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আবেদনের শুনানি এক সপ্তাহ মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (৬ নভেম্বর) খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী মো. মাকসুদ উল্লাহ সিনিয়র আইনজীবীর ব্যক্তিগত সমস্যার কথা উল্লেখ করে এক সপ্তাহ সময় আবেদন করেন। তখন আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
এ মামলায় গত ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে সাক্ষ্য শেষ করেন বাদী মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম। পরে বাদীর সাক্ষ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। বাদী মাহবুবুল আলম নথি দেখে দেখে সাক্ষ্য দিয়েছেন দাবি করে সে সাক্ষ্য বাতিলের আবেদন করা হয়।
বিচারিক আদালত গত ১৭ সেপ্টেম্বর সে আবেদন খারিজ করলে হাইকোর্টে বাদীর সাক্ষ্য চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
গত ১৯ মার্চ এই মামলায় চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এরপর গত ২৩ মে আদালতে সাক্ষ্য দেওয়া শুরু করেন মামলার বাদী দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম। তবে মামলার চার্জ গঠনের বৈধতা প্রশ্নে হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। গত ৩০ আগস্ট বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ সেই আবেদন খারিজ করে দেন।
এ মামলার অপর আসামিরা হলেন তৎকালীন মুখ্য সচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ও বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এমএএইচ সেলিম। এদের মধ্যে প্রথম তিনজন পলাতক।
অপরদিকে, আসামিদের মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়ার নামে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তদন্তের পর ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
দুদকের করা অপর দুই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। সেখান থেকে পরে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায়ই সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান। বর্তমানে তিনি নিজ বাসায় চিকিৎসাধীন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০২৩
ইএস/এমজে