ঢাকা: নাশকতার অভিযোগে করা পৃথক পাঁচ মামলায় যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম মজনুসহ বিএনপির ৭৮ নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের তিনজন বিচারক এসব দণ্ড দেন।
এদিন সর্বোচ্চ তিনটি মামলায় রায় দেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোশাররফ হোসেন।
এর মধ্যে শাহজাহানপুর থানার মামলায় রফিকুল ইসলাম মজনুসহ দলটির ১৩ নেতাকর্মীকে আড়াই বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেন তিনি।
দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপি নেতা আহসান হাবিব হীরা, আবদুল্লাহ জামান আদিত্য চৌধুরী, আলমগীর হোসেন আজাদ, গিয়াস উদ্দিন মানিক, বদরুল আলম সবুজ, সোহাগ ভূঁইয়া, মোহাম্মদ ভাসানী চাকলাদার, মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন প্রমুখ। একইসঙ্গে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ৫ আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
বনানী থানার অপর মামলায় বিএনপির ২০ নেতাকর্মীকে দুই ধারায় এক বছর নয় মাসের কারাদণ্ড দেন তিনি। এর মধ্যে এক ধারায় তাদের তিন মাস এবং আরেক ধারায় দেড় বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন- বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ, মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ওরফে বাচ্চু মিয়া, শাহজাহান সরকার, মাহমুদুল হাসান, মোহাম্মদ ইমাম হোসেন ওরফে ইমন, সেলিম আহমেদ রাজু ওরফে জাদু সেলিম, শাজাহান ওরফে বাবুর্চি শাহজাহান, মিজানুর রহমান আক্তার, টাক ফজলু, রেজাউর রহমান ফাহিম।
জানা যায়, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে নাশকতার অভিযোগে আসামিদের বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহজানপুর ও বনানী থানায় মামলা দুটি দায়ের করে পুলিশ।
এছাড়া এক দশক আগে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় নাশকতা ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের মামলায় যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব ও সাবেক কাউন্সিলর আনোয়ারুজ্জামানসহ বিএনপির ১৪ জনকে আড়াই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন একই আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন- ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পলাশ, তেজগাঁও থানা সেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, রাজ, সেলিম, কবির, শফিজুর রহমান শাফিজ যুবদল নেতা জালাল, শ্রমিক দল নেতা, শাহ আলম, আব্দুল জলিল, ইউসুফ হোসেন মিন্টু, তেজগাঁও কলেজ ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু ও ছাত্রদল নেতা ঝন্টু।
সরকারের পদত্যাগের দাবিতে রাজধানীর তেজগাঁও থানা এলাকায় নাশকতা ও গাড়িতে আগুন দেয়ার অভিযোগে ২০১৩ সালের নভেম্বরে পুলিশ বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় এ মামলাটি দায়ের করে।
এদিকে ক্যান্টনমেন্ট থানার নাশকতার এক মামলায় বিএনপির ১৮ নেতাকর্মীকে ৪ বছরের কারাদণ্ড দেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী। প্রত্যেক আসামিকে তিন ধারায় যথাক্রমে দুই বছর, দেড় বছর ও ছয় মাসের সাজা দেয়া হয়। সব সাজা একসঙ্গে চলবে বলে রায়ে উল্লেখ করেন বিচারক। ফলে তাদেরকে দুই বছর কারাভোগ করতে হবে।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- তারেকুল রাজ্জাক, মহিবুল্লাহ, মো. পারভেজ, মো. নাঈম হোসেন, শামসুল আলম বাবুল, তরিকুল ইসলাম বাপ্পি, রনি, মো. মোশারফ হোসেন, মাঈনুল ইসলাম অমি, মো. তুহিন, মো. জিয়া, মো. কবির, মো. সাদ্দাম হোসেন রাব্বি, মোমিনুল হক অপু, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, তাসলিমা আক্তার ভূঁইয়া বেবী, মো. জিন্নাত আলী ও জিহাদ আল সিফাত।
জানা যায়, ২০১৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ক্যান্টনমেন্ট থানা এলাকায় খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে মিছিল করে বিএনপি। মিছিলে নাশকতার অভিযোগ তুলে ৬৩ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেন ক্যান্টনমেন্ট থানার এসআই মো. কামরুল ইসলাম।
মামলাটি তদন্ত করে ২০১৯ সালের ৩১ জুলাই ৩৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. আসাদুজ্জামান। পরে ২০২২ সালের ২১ মার্চ মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুল হকের আদালত। এ মামলার বিচার চলাকালে মোট ৮ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন।
অপরদিকে এক যুগ আগে মতিঝিল থানায় করা বাস পোড়ানোর মামলায় বিএনপির ১৩ নেতাকর্মীকে দুই ধারায় দুই বছর করে কারাদণ্ড দেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহ।
দণ্ডিতরা হলেন- মোহসিন আহম্মদ, আ. মজিদ, জাহাঙ্গীর ওরফে টেম্পু জাহাঙ্গীর, নাসিরউদ্দিন তরফদার, ওলিউল্লাহ গাজী, রেদওয়ানুল কবির, খানজাত আলী সুজন, মো. মনির হোসেন, শাহাজুল ইসলাম, আবুল কালাম, আ. কাদের ও ফারুক মোল্লা।
জানা যায়, ২০১১ সালের ৪ জুন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় হরতালের সমর্থনে একটি বাসে আগুন দেয়ার ঘটনায় এ মামলা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২৩০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২৩
কেআই/এমএম