ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

নাটোরে অপহরণ-ধর্ষণের দায়ে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২৪
নাটোরে অপহরণ-ধর্ষণের দায়ে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন 

নাটোর: নাটোরের বাগাতিপাড়ায় এক নারীকে অপহরণ করে ধর্ষণ করার দায়ে শ্রী দুলাল (৩৬) নামে এক ব্যক্তিকে পৃথক দুইটি ধারার একটিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অপরটিতে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। একই সঙ্গে জরিমানার সমুদয় টাকা ভিকটিমকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে নাটোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের (জেলা ও দায়রা জজ) বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ আদেশ দেন। এসময় মো. নিজাম (৫২) নামে একজনকে খালাস দেওয়া হয়।  

রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। ঘটনায় প্রায় ১০ বছর পর এ মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।

দণ্ডপ্রাপ্ত দুলাল বাগাতিপাড়া উপজেলার চিমনাপুর গ্রামের অজিত কুমার দাসের ছেলে। ঘটনার সময় তার বয়স ছিল ২৪ বছর। আর খালাসপ্রাপ্ত নিজাম একই গ্রামের মৃত জমির উদ্দিনের ছেলে। ঘটনার সময় তার বয়স ছিল ৪০ বছর। আর ভিকটিম একই গ্রামের বাসিন্দা।

নাটোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (বিশেষ পিপি) অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, ২০১০ সালের ২৩ জুলাই দিনগত রাত পৌনে ৮টার দিকে ওই নারী তার ছোট ভাইকে খুঁজতে বাড়ির বাইরে যান। এসময় বাড়ির কিছু দূরে সাঁকোর দক্ষিণে গেলে শ্রী দুলাল ও নিজাম একটি ঝোপ থেকে বের হয়ে ওই নারীকে মুখ চেপে ধরেন এবং মুখে গামছা ঢুকিয়ে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে যান।

এসময় তারা ওই নারীকে দূরে কালাম চৌধুরী নামে এক ব্যক্তির আখ ক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এসময় ওই নারীর গোঙানির শব্দ পেয়ে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে চোর চোর বলে চিৎকার করতে থাকেন। এতে দুলাল ও নিজাম দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন। পরে বিষয়টি ওই নারী তার পরিবার ও গ্রাম্য প্রধানদের জানালে তারা সালিশের মাধ্যমে নিষ্পত্তির চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। দুইদিন পর ২৫ জুলাই দিনগত রাতে ওই নারী নিজেই বাদী হয়ে বাগাতিপাড়া থানায় দুলাল ও নিজামকে অভিযুক্ত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত শেষে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহিম একই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশিট দেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে বিচারক আজ এই রায় ঘোষণা করেন।  

রায়ে শ্রী দুলাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ ( সংশোধিত/২০০৩) এর ৯ (১) ধারায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। এছাড়া একই মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত/২০০৩) এর ৭ ধারায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। রায়ে জরিমানার সমুদয় টাকা ভিকটিমকে দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।

বিশেষ পিপি বলেন, রায়ে বলা হয়েছে দণ্ডপ্রাপ্ত দুলালের সাজা একটার পর একটা কার্যকর হবে। এছাড়া মামলার রায়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত/২০০৩) এর ৭/৯(১)/৩০ ধারায় দোষী সাব্যস্ত না হওয়ায় নিজামকে খালাস দেন আদালত।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।