ঢাকা: একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রবীণ সাংবাদিক আফতাব আহমেদ হত্যা মামলায় পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়েছে।
৫৫ পৃষ্ঠার রায়ে অনুলিপি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রায়টি বাংলায় প্রকাশ করা হয়।
রায়ে হাইকোর্ট বিভাগ বলেন, জতীয় দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার প্রবীণ ফটোসাংবাদিক ছিলেন আফতাব আহমেদ। যিনি মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন ও পরে অসংখ্য দুর্লভ ছবি ধারণ করে বিরল সম্মান ‘একুশে পদক’ প্রাপ্ত হয়ে বিরাট মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। সেই ৭৯ বছর বয়সী আফতাব উদ্দিন আহমেদকে সামান্য অর্থের লোভে নৃশংস ও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
ফলে এ অপরাধীরা কোনো ক্রমেই কোনো প্রকার অনুকম্পা, কৃপা পেতে পারেন না বলে উল্লেখ করেন হাইকোর্ট।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারানুম রাবেয়া মিতি।
আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, এস এম শাহজাহান ও হেলাল উদ্দিন মোল্লা।
২০১৭ সালের ২৮ মার্চ প্রবীণ সাংবাদিক আফতাব আহমেদ হত্যা মামলায় পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রহমান সরদার।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া পাঁচ আসামি হলেন- বিল্লাল হোসেন কিসলু, হাবিব হাওলাদার, রাজু মুন্সি, রাসেল ও আফতাব আহমেদের গাড়িচালক হুমায়ুন কবির মোল্লা। অপর আসামি সবুজ খানকে সাত বছর কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। রাজু মুন্সি ও রাসেল পলাতক রয়েছেন।
পরে নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য নথি (ডেথ রেফারেন্স) হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরা আপিল করেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর রামপুরায় নিজ বাসা থেকে আফতাব আহমেদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে হত্যার দায় স্বীকার করে হুমায়ুন কবির, হাবিব হাওলাদার ও বিল্লাল হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ওই জবানবন্দিতে তারা স্বীকার করেন, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আফতাব আহমেদের বাসায় ডাকাতি করার সময় তাকে গামছা দিয়ে বেঁধে শ্বাসরোধে তারা হত্যা করেন।
আসামি বিল্লাল হোসেন কিসলু আফতাব আহমেদের বাসার ড্রয়ার ভেঙে ৭২ হাজার টাকা লুট করেন। পরে তারা বৌবাজার নামে একটি জায়গায় এ টাকা ভাগাভাগি করে নেন।
৬৯ বছর বয়সী সাংবাদিক আফতাব আহমেদ দৈনিক ইত্তেফাকের প্রবীণ ফটোসাংবাদিক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ ও পরে অনেক দুর্লভ ছবি তোলেন। আলোকচিত্র সাংবাদিকতায় অনন্য অবদানের জন্য ২০০৬ সালে তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২৪
ইএস/আরবি