ঢাকা, রবিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বিডিআর হত্যাযজ্ঞ

দ্রুত নিষ্পত্তি চায় আসামিপক্ষ, শুনানিতে আলাদা বেঞ্চের পক্ষে রাষ্ট্র

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৪
দ্রুত নিষ্পত্তি চায় আসামিপক্ষ, শুনানিতে আলাদা বেঞ্চের পক্ষে রাষ্ট্র ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ সংঘটিত হয়, ফাইল ফটো

ঢাকা: ১৫ বছর আগে রাজধানীর পিলখানায় বাংলাদেশ রাইফেলস [বিডিআর-বর্তমানে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)] সদর দপ্তরে হত্যাযজ্ঞের মামলা হাইকোর্টে নিষ্পত্তির পর এবার আপিল বিভাগে চূড়ান্ত শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

আপিল বিভাগে পর্যাপ্ত সংখ্যক বিচারক নিয়োগের পর আলাদা বেঞ্চ গঠন করতে হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায় বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যরা। সেই ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন প্রাণ হারান।

এ ঘটনায় করা দুই মামলার মধ্যে হত্যাযজ্ঞের মামলার বিচার কাজ হাইকোর্ট বিভাগে শেষ হয়েছে। অপরদিকে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলা এখনও নিম্ন আদালতে বিচারাধীন।

হত্যাযজ্ঞের মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর রায় দেন বিচারিক আদালত। এতে ১৫২ জনের ফাঁসি ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় ১৬০ জনের। ১০ বছরসহ বিভিন্ন মেয়াদের সাজা হয় ২৫৬ জনের। খালাস পান ২৭৮ জন।

নিয়ম অনুসারে ডেথ রেফারেন্স আসে হাইকোর্টে। আপিল করেন আসামিরা। কয়েকজন খালাসপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষও। হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর রায় দেওয়া হয়। রায়ে ফাঁসি বহাল হয় ১৩৯ জনের। যাবজ্জীবন দণ্ড দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। ২২৮ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়। খালাস পান ৪৫ জন।

ওই রায়ের ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে ১১ হাজার ৪০৭ পৃষ্ঠার রায় লিখেছেন বিচারপতি মো. শওকত হোসেন। ১৬ হাজার ৫৫২ পৃষ্ঠার রায় লিখেছেন বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী। আর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার লিখেছেন ১ হাজার ১০০ পৃষ্ঠার রায়।

এদিকে উচ্চ আদালতে খালাস পাওয়া ও সাজা কমা ৮৩ জনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) দায়ের করেছে। আসামিপক্ষেও লিভ টু আপিল দায়ের করা হয়েছে আপিল বিভাগে।

রায়ের পৃষ্ঠা বেশি হওয়ায় একটি আপিলের কাগজের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৫৬২৩ পৃষ্ঠায়। এতে আপিল করতে অর্থ কষ্ট পড়েন আবেদনকারীরা। পরে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পেপারবুক ছাড়া আপিল করতে প্রধান বিচারপতি প্রশাসনিক আদেশ দেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, সরকারপক্ষ থেকে আশা করছি, বিচারিক আদালত যে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন এবং হাইকোর্ট বিভাগ বহাল রেখেছেন, সেটা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগেও বহাল থাকবে। এই মুহূর্তে পর্যাপ্ত সংখ্যক বিচারক (আপিল বিভাগে) নেই। আশা করা যাচ্ছে বিচারক এলে (নিয়োগ দেওয়ার পর) আলাদা বেঞ্চ গঠন করা হবে। এটা এক নাগাড়ে শুনানি করলেও দুই মাসের আগে শেষ করা যাবে না।  

আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রধান বিচারপতির কাছে আমাদের আকুল আবেদন- উভয় দিক বিবেচনা করে মামলাটির কার্যক্রম যদি দ্রুত নিষ্পত্তি হয়, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৪
ইএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।