ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বোনের প্রেমিককে হত্যার দায়ে ভাই-মামাতো ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০২৪
বোনের প্রেমিককে হত্যার দায়ে ভাই-মামাতো ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ড

কুমিল্লা: কুমিল্লার হোমনায় বোনের সঙ্গে প্রেম করায় ফয়সল (২২) নামে এক যুবককে গলা কেটে হত্যার দায়ে প্রেমিকার ভাই ও মামাতো ভাইকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন কুমিল্লার আদালত।

১ এপ্রিল (সোমবার) কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের বিচারক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।

 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কুমিল্লা হোমনা উপজেলার রাজনগর গ্রামের মো. ফুল মিঞার ছেলে মো. শামীম মিয়া (২৪) ও একই উপজেলার সাফলেজি গ্রামের মো. বেদন মিয়ার ছেলে মো. দুলাল মিয়া (২০)।

মামলার বিবরণে জানা যায়, হত্যার শিকার ফয়সলের সঙ্গে আসামি শামীমের বোন কলেজছাত্রী মেহেদী আক্তারের (১৮) প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ২০২০ সালের ৫ জুন ফয়সল তার মামা নজরুল মিয়ার ছাদে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় তার মোবাইল ফোনে আসামি শামীম কল করে বলেন আমিরুল ইসলাম উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ে যাওয়ার জন্য। তখন ফয়সাল কাউকে কিছু না বলে শামীমের কাছে চলে যান। বাড়িতে ফিরে না আসায় স্থানীয় লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। কিন্তু না পেয়ে নিহতের বাবা মো. মকবুল হোসেন হোমনা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে প্রথমে আসামি মো. শামীম মিয়াকে গ্রেপ্তার করেন।  

শামীম জানায়, সে ও দুলালসহ প্রথমে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে পরে ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে ফয়সলকে হত্যা করেন। এরপর মরদেহটি বিদ্যালয়ের মাঠে মাটিতে পুঁতে রাখা হয়।  

এ ব্যাপারে ২০২০ সালের ১৩ জুন নিহত ফয়সলের বড় বোন হোমনা থানার রাজনগর গ্রামের হারুন মিয়ার স্ত্রী সালমা আক্তার বাদী হয়ে মো. শামীম মিয়াসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে হোমনা থানায় মামলা দায়ের করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামি মো. শামীম মিয়া ও মো. দুলাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেন। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২০২১ সালের ১৮ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। আসামি শামীম ও দুলালের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের মৃত্যুদণ্ড এবং একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। রায় ঘোষণাকালে দুই আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষে নিযুক্ত কৌঁসুলি শেখ মাসুদ ইকবাল মজুমদার ও মো. নূরুল ইসলাম বলেন, আমরা আশা করছি উচ্চ আদালত এ রায় বহাল রেখে দ্রুত বাস্তবায়ন করবেন।  

অপরদিকে আসামিপক্ষে নিযুক্ত কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট বিমল কৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, এ রায়ে আসামিপক্ষ অসন্তুষ্ট ও ক্ষুব্ধ। রায়ের কপি হাতে পেলে শিগগিরই উচ্চ আদালতে আপিল করব।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।