ঢাকা: বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কেক কেটে উদযাপন করেছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী (বার) সমিতি।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির হলরুমে ৭৫ পাউন্ডের কেক কেটে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আইনজীবী সমিতির সম্পাদক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন,অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক এম মাহবুব আলী, বশির আহমেদ, মো.নুরুল ইসলাম সুজন, মোমতাজ উদ্দিন আহমদে মেহেদী, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোতাহার হোসেন সাজু, আজাহার উল্লাহ ভুইয়া, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ প্রমুখ।
আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিলো ২৩ জুন। বাঙালির অধিকার ও বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাসে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে আওয়ামী লীগের নাম।
বাংলার এ ভূখণ্ডের ক্রান্তিকালে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরনো ঢাকার কেএন দাস লেনের রোজ গার্ডেনে আওয়ামী মুসলিম লীগ নাম নিয়ে দলটির প্রতিষ্ঠা হয়। তখন মুসলিম লীগের নেতাকর্মীদের একটি অংশ বেরিয়ে গিয়ে রাজনৈতিক কর্মী সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে নতুন এ দল গঠন করেন।
সাম্প্রদায়িকতার ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের অংশ পূর্ব পাকিস্তানে (পূর্ব বাংলা) শুরু থেকেই অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক চিন্তার প্রসার ঘটতে থাকে। তৎকালীন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সাম্প্রদায়িক মুসলিম লীগ থেকে বেরিয়ে আসা এ আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার প্রায় ছয় বছর পর ১৯৫৫ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ নীতি গ্রহণ করে দলটি আওয়ামী লীগ নাম ধারণ করে। বাঙালির অধিকার আদায়ের লড়াই সংগ্রমের ব্রত নিয়ে আওয়ামী লীগ নামের এ রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালির অধিকার আদায়ের প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠে এই আওয়ামী লীগ।
প্রথম সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন প্রথম কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক। নেতৃত্বের ধারাবাহিকতার এক পর্যায়ে শেখ মুজিবুর রহমানই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসেন। ১৯৬৬ সালের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব পান এবং সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাঙালি জাতি এ মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা এবং ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর নেতৃত্ব শূন্যতায় পড়ে আওয়ামী লীগ। নেতৃত্বের এই শূন্যতা থেকেই দলের মধ্যে একাধিক ভাঙন, গ্রুপিং ও বহু ধারায় বিভক্তি দেখা দেয়। দলের চরম ক্রান্তিকালে ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। নির্বাসনে থাকা অবস্থায়ই শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি নির্বাচন করা হয়।
শেখ হাসিনা ওই বছর ১৭ মে দেশে ফিরে আসার পর তাঁর নেতৃত্বে দ্বিধা-বিভক্ত আওয়ামী লীগ আবার ঐক্যবদ্ধ হয়। গত ৪ দশকের বেশি ধরে তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পরিচালিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৪ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২৪
ইএস/এমএম