ঢাকা: বিচারকের স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৯ এর বেঞ্চ সহকারী খন্দকার মোজাম্মেল হক জনিকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রোববার (৭ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাকিল আহাম্মদ তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ৪ জুলাই অপর একটি আদালত তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন। সেই রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুমন চন্দ্র সরকার। আসামিপক্ষে আইনজীবী কামাল হোসেন পাটোয়ারী জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সিএমএম আদালতে কোতোয়ালি থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের এসআই তৌহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
একই আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো. নূরে আলম বাদী হয়ে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে তিনি বলেন, আসামি জনি শেরে-বাংলা নগর থানার এক মামলায় ২০২২ সালে ৯ মার্চ ও ২১ মার্চ দুটি ভিন্ন আদেশ নথিতে লিপিবদ্ধ করেন। যাতে প্রদত্ত স্বাক্ষর অত্র আদালতে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজ্ঞ বিচারকের নয়। বর্ণিত মামলায় ২০২২ সালের ২১ মার্চ প্রচারিত আদেশে আসামি অহিদুজ্জামানকে ফৌজদারি কার্যবিধির ২৪৯ ধারা অনুযায়ী মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে মুক্তি দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়। উক্ত আদেশের স্বাক্ষর অত্র আদালতে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজ্ঞ বিচারকের নয়। উক্ত আদেশ বেঞ্চ সহকারী খন্দকার মোজাম্মেল হক জনি কর্তৃক লিখিত হওয়ায় এটি সুস্পষ্ট হয় যে, তিনি বিজ্ঞ বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে তার ওপর অর্পিত দায়িত্বের বরখেলাপ করে তার অগোচরে উক্তরূপ আদেশ প্রচার করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে ২০২৪ সালের ৩ মার্চ যাত্রাবাড়ী থানার এক মামলার বিচার ও নিষ্পত্তির জন্য বিজ্ঞ বিচারকের আদালতে পাঠানো হয়। সেই মামলায় বিচারকের অগোচরে ২০২৪ সালের ৪ এপ্রিল আসামি নাসির উদ্দিন ও আশিকুর রহমানকে প্রবেশন দেওয়ার আদেশ কজলিস্ট ও কোর্ট তিনি ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করেন। যদিও এরূপ কোনো আদেশ বিচারক প্রচার করেননি। এমনকি নথিটি শুনানির জন্য বিচারকের কাছে উপস্থাপনও করা হয়নি। আসামি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়ে এরূপ ন্যক্কারজনক অপরাধ সংঘটন করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়।
এসব বিষয়ে গত ৩০ জুন তাকে লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। তিনি গত ১ জুলাই নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে কারণ দর্শানোর জবাব দেন। তার লিখিত ব্যাখ্যা থেকেও এটি সুস্পষ্ট যে, তিনি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়ে এসব হীন অপরাধ সংঘটন করেছেন, যা চাকরিবিধি ও শৃঙ্খলা বিধিমালার পরিপন্থি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২৪
কেআই/আরবি