ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

হরিজন কলোনিতে উচ্ছেদের ওপর স্থিতাবস্থা থাকবে, রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৪ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২৪
হরিজন কলোনিতে উচ্ছেদের ওপর স্থিতাবস্থা থাকবে, রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ

ঢাকা: রাজধানীর বংশালের মিরনজিল্লা হরিজন কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযানের ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ চলমান রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে দুই মাসের মধ্যে হাইকোর্টে বিভাগের জারি করা রুল নিষ্পত্তি করতে বলেছেন।

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) করা আবেদন নিষ্পত্তি করে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।

আদালতে হরিজনদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সারা হোসেন। সিটি করপোরেশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুরাদ রেজা।

বুধবার (১০ জুলাই) হরিজনদের উচ্ছেদের বিরুদ্ধে তাদের পক্ষের আইনজীবী অনীক আর হক সাংবাদিকদের বলেন, বংশালের মিরনজিল্লা হরিজন কলোনিতে ডিএসসিসি নতুন করে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর উদ্যোগ নেয়। এজন্য হরিজন কলোনিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ মোতায়েন করতে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেয়।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সিটি করপোরেশনের এ চিঠিতে স্থানীয় কাউন্সিলরকে সহায়তা করতেও বলা হয়।

এরপর বুধবার হরিজন কলোনিতে আবার অভিযান শুরুর উদ্যোগ নিলে সেখানে বসবাসরত হরিজনদের পক্ষে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ সিটি করপোরেশনের অভিযানের ওপর স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। একই সঙ্গে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগে এ বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন।

সে অনুসারে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগে শুনানি শেষে আদেশ দেন।

এর আগে পুরান ঢাকার আগাসাদেক সড়কের পাশে থাকা মিরনজিল্লা সুইপার কলোনিতে হরিজন সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের উচ্ছেদ প্রক্রিয়ার ওপর ৩০ দিনের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।  

জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবীর করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ১৩ জুন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে ওই তিন আইনজীবী শুনানি করেন।

তিন আইনজীবী হলেন- মনোজ কুমার ভৌমিক, উৎপল বিশ্বাস ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান।

ওই আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আপিল বিভাগে আবেদন করে।    

হাইকোর্টের আদেশের দিন ১৩ জুন আইনজীবী আইনুন্নাহার সিদ্দিকা বলেন, মিরনজিল্লা সুইপার কলোনিতে থাকা হরিজন সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের উচ্ছেদ প্রক্রিয়ার ওপর ৩০ দিনের স্থিতাবস্থা দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে এ সময়ে তাদের সেখান থেকে উচ্ছেদ করা যাবে না। এ সময়ে তাদের জন্য বিকল্প জায়গার ব্যবস্থা করা হলে তারা সেখান থেকে চলে যাবেন।

গত ১২ জুন একটি জাতীয় দৈনিকে ‘প্রতিবাদ করে উচ্ছেদ ঠেকাল শিক্ষার্থীরা, আতঙ্কে বাসিন্দারা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়।

ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে তিন আইনজীবী ওই রিট করেন।

পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, আধুনিক কাঁচাবাজার নির্মাণের জন্য জায়গা খালি করতে গত ১১ জুন বেলা ১১টার দিকে শতাধিক পুলিশ ও উচ্ছেদ পরিচালনার জন্য যানযন্ত্র (এক্সকেভেটর ও পেলোডার) নিয়ে কলোনিতে গিয়েছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা। কিন্তু হরিজন সম্প্রদায়ের বাসিন্দা ও তাদের স্কুলপড়ুয়া সন্তানদের তীব্র প্রতিবাদের মুখে সেদিন রাত ৯টা পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান চালাতে পারেননি তারা। পরে হরিজন সম্প্রদায়ের সঙ্গে সমঝোতা হয় দক্ষিণ সিটির।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, মিরনজিল্লা সুইপার কলোনিতে করপোরেশনের প্রায় ৩ দশমিক ২৭ একর জমি আছে। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন বসবাস করে আসছেন। কলোনির এক পাশে ২৭ শতাংশ জমিতে আধুনিক কাঁচাবাজার নির্মাণ করতে হলে সেখানকার কিছু বাসাবাড়ি ভেঙে দিতে হবে। আগে বিদ্যমান কাঁচাবাজারটি ১৭ শতাংশ জমিতে ছিল। বাকি জমি থেকে স্থাপনা সরাতে এ অভিযানের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১১১১ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২৪
ইএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।