ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সময়ের আলোর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকসহ তিনজনের নামে কাস্টমসের সাবেক কমিশনারের মামলা

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২৪
সময়ের আলোর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকসহ তিনজনের নামে কাস্টমসের সাবেক কমিশনারের মামলা

ঢাকা: দুর্নীতির খবর প্রকাশ করায় দৈনিক সময়ের আলোর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন কাস্টমসের সাবেক কমিশনার ড. এস এম হুমায়ুন কবির। মামলায় ১০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করে পত্রিকাটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কমলেশ রায়, প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ্ ও জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক এস এম মিন্টুকে আসামি করা হয়েছে।

গত ২৫ আগস্ট ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা আদালতে এ মামলা করেন হুমায়ুন কবির। আসামিদের আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

জানা গেছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা বিভিন্ন খাতের দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজদের সম্পর্কে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানের সঙ্গে গণমাধ্যমগুলোও দুর্নীতিবিরোধী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) সাবেক কাস্টমস কমিশনার ড. এস এম হুমায়ূন কবিরের বিরুদ্ধে নানা তথ্য-উপাত্তসহ লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১৯ আগস্ট সময়ের আলোতে কাস্টমস অধিদপ্তরের সাবেক কমিশনার ড. এস এম হুমায়ূন কবিরের বিরুদ্ধে চাকরিকালীন ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ নিয়ে খবর প্রকাশ করা হয়।

এ ছাড়া তার অবৈধ সম্পদের বিষয়ে সময়ের আলোর পক্ষ থেকে আরো অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। বিষয়টি জানতে পেরে হুমায়ূন কবির কমলেশ রায়, গাজী আহমেদ উল্লাহ ও এস এম মিন্টুর বিরুদ্ধে এই মামলা করেন।

জানতে চাইলে সময়ের আলোর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কমলেশ রায় বলেন, দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে সময়ের আলো সব সময়ই জোরালো ভূমিকা রেখে সংবাদ প্রকাশ করে গেছে। আগামীতেও দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে যাবে সময়ের আলো।

তিনি আরো বলেন, দুর্নীতির খবর প্রকাশ করায় ড. এস এম হুমায়ূন কবির যে মানহানির মামলা করেছেন, সেটা মূলত তিনি তার বিষয়ে দুর্নীতির তদন্ত বা ব্যবস্থা গ্রহণ থেকে নিজেকে বাঁচানোর কৌশল বলে মনে করি। কেননা তার বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির অভিযোগে খবর প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে তার আত্মপক্ষ সমর্থনের অংশ হিসেবে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আলাদা প্রতিবাদলিপি পাঠালে সেটিও ছাপানো হয়েছে। এর পরও মানহানির মামলার উদ্দেশ্য হচ্ছে গণমাধ্যমের দুর্নীতিবিরোধী খবর প্রকাশের ক্ষেত্রে প্রকারান্তে হুমকিস্বরূপ। ড. এস এম হুমায়ূন কবিরের মানহানি মামলার বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেবে সময়ের আলো।

এদিকে দুদকে জমা দেওয়া অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, ড. এস এম হুমায়ূন কবির ১৯৯৪ সালের ২৫ এপ্রিলে ১৩তম বিসিএস (শুল্ক ও আবগারি) ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। তার গ্রামের বাড়ি যশোর জেলার পুরাতন কসবা উপজেলার পালবাড়ী মোড়ে। তবে নিজেকে পরিচয় দিতেন গোপালগঞ্জের লোক হিসেবে। গোপালগঞ্জের বাসিন্দা পরিচয় ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ভাইয়ের যোগসাজশে ড. হুমায়ূন কবির দুর্নীতির মাধ্যমে নিজের ভাই-বোন ও আত্মীয়-স্বজনের নামে বিপুল অবৈধ অর্থ ও সম্পদ অর্জন করেছেন। এ ছাড়া হুমায়ূন কবির চাকরিকালীন ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্য করেছেন।

জানা গেছে, হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে এক ব্যক্তি দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছেন। ওই ব্যক্তি অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, উচ্চ সিসির গাড়ির সিসি কম দেখিয়ে শুল্ককর ফাঁকি, ঋণখেলাপি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে কর মওকুফ করতেন হুমায়ুন কবির। এমনকি শেয়ার কেলেঙ্কারিতেও জড়িত ছিলেন এই কর্মকর্তা। সেই সঙ্গে ভুয়া অভিযোগের মাধ্যমে সিআইডিতে কর্মরত ছোট ভাই পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম দুদকের মানি লন্ডারিং সেলে কাজ করার সুবাদে বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে চিঠি ইস্যু করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের নামে হয়রানি ও অবৈধ অর্থ গ্রহণ করতেন।  

বাংলাদেশ সময়: ২২১০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।