ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সাবেক ১২ মন্ত্রী-উপদেষ্টাসহ ২০ জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০২৪
সাবেক ১২ মন্ত্রী-উপদেষ্টাসহ ২০ জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ

ঢাকা: গ্রেপ্তার সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ সাবেক ১০ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, এক বিচারপতি, এক সচিব, পাঁচ পুলিশ ও এক সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ২০ জনের বিচার করতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

এদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব, বিচারপতিসহ ১৪ জনকে আগামী ১৮ নভেম্বর এবং ছয়জন সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাকে ২০ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে বলা হয়েছে।

জুলাই-আগস্টে গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করে রোববার (২৭ অক্টোবর) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। বিষয়টি জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম।  

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান, ড. দীপু মনি, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, জুনাইদ আহমেদ পলক, তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, সালমান এফ রহমান, সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, সাবেক বিচারপতি এইচ এম শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব জাহাঙ্গীর আলমকে বিচার করার জন্য ১৮ নভেম্বর হাজির করতে আদেশ দিয়েছেন আদালত।

অন্যদিকে গ্রেপ্তার সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, বরখাস্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, সাবেক ঢাকা জেলা এসপি আব্দুল্লাহ হিল কাফী, সাভারের ওসি আবুল হাসান এবং পুলিশ কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম, আরাফাত হোসেনকে বিচার করার জন্য ২০ নভেম্বর আদালতে হাজির করতে বলা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম বলেন, পুলিশ কর্মকর্তাসহ যারা গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাদের নাম আমরা ধারাবাহিকভাবে সবার সামনে নিয়ে আসবো। হয়তো এখানে একটু সময় লাগবে। কিন্তু কোনো দোষীকে বাদ দেওয়া হবে না। অথবা কোনোভাবে প্রভাবিত হয়ে, অপরাধ করেছে এমন কোনো ব্যক্তিকে ছাড় দেওয়া হবে না। এই দুটো মেসেজ আমরা জাতির উদ্দেশ্যে জানাতে চাই।  

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার সব মামলার বাদী হবেন চিফ প্রসিকিউটর। আমাদের কাছে জনগণ বা ভিকটিম পরিবার যেসব নিয়ে আসেন, এগুলো শুধু তথ্য। এই তথ্যগুলোকে তদন্ত সংস্থা গ্রহণ করে, পরে পর্যালোচনা করে একটি রিপোর্ট তৈরি করা হয়। সেই রিপোর্ট চিফ প্রসিকিউটরের কাছে দেওয়া হলে, চিফ প্রসিকিউটর কোর্টের কাছে আবেদন করেন অ্যারেস্ট ইস্যু করার জন্য। আজকে পর্যন্ত তিনটি মিসকেস করা হয়েছে। প্রথম মিসকেসের মধ্যে শেখ হাসিনা এবং দ্বিতীয় মিসকেসে ওবায়দুল কাদেরসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের এবং তৃতীয় মিসকেসে পুলিশ সদস্যদের আওতায় নেওয়া হয়েছে।  

মো. তাজুল ইসলাম বলেন, প্রথম যখন এই মামলা করা হয়েছে আমরা অপরাধীদের নাম প্রকাশ করিনি। যাতে তারা কেউ পালিয়ে যেতে না পারে।   

প্রমাণের ভিত্তিতে অপরাধীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে উল্লেখ করে চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ছাত্র-জনতাকে সমূলে বা আংশিকভাবে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য তাদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার এবং এপিসি ও হেলিকপ্টার ব্যবহার করে নিরস্ত্র সিভিলিয়ানদের হত্যা করা হয়েছে। শুধু হত্যাই করা হয়নি, লাশগুলোকে বিকৃত করা ও গুম করা, জানাজার নামাজ পড়তে না দেওয়া, ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করতে না দেওয়াসহ যত মানবতাবিরোধী অপরাধ আছে তারা সেগুলো করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০২৪
ইএসএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।