ঢাকা: ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোল থেকে রেড নোটিশ জারি করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন থেকে নির্ধারিত ফরম পূরণ করে তা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) পুরাতন হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউট মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির বিষয়ে যে নির্ধারিত ফর্ম আছে তা পূরণ করে একটি চিঠির মাধ্যমে ফরওয়ার্ডিং করে এনসিবির কাছে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি তিন মাসের মধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ হলে মূল বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের একটি শাখা আছে নেশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) নামে। তারা ইন্টারপোলের যত বিষয় আছে তা দেখভাল করেন। গত ১৩ নভেম্বর চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয় থেকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির বিষয়ে যে নির্ধারিত ফর্ম আছে তা পূরণ করে একটি চিঠির মাধ্যমে ফরওয়ার্ডিং করে পুলিশের এই এনসিবি সংস্থার কাছে পাঠিয়েছি। শেখ হাসিনা বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির বাকি কাজ করার দায়িত্ব এনসিবির।
অগ্রগতির বিষয়ে তিনি বলেন, ইন্টারপোলের কাছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড নোটি জারি হয়েছে কি না, এটা বলার দায়িত্ব এনসিবির তথা পুলিশ মহাপরিদর্শকের অফিসের।
তিনি বলেন, রেড নোটিশ জারির খবর আমরা ক্লিয়ারলি বলতে পারছি না যে, তাদের মাধ্যমে এটা জারি হয়েছে কিনা বা ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে এটা আছে কি না, এ বিষয়ে জানতে হলে পুলিশ সদর দপ্তরে এনসিবির দায়িত্বে একজন অ্যাডিশনাল আইজিপি আছেন, তার কাছে জানা যাবে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে যদি কোনো কিছু জানতে পারি তাহলে আমরা জানিয়ে দেব।
শেখ হাসিনার বিষয়ে তদন্ত খুব জোরেশোরে চলছে জানিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, সারাদেশে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় মামলা হয়েছে, সেগুলো চলমান থাকবে। তবে আমাদের কাছে তার বিরুদ্ধে যত অভিযোগ আছে বিশেষ করে জুলাই আগস্টের গণহত্যার এবং গত ১৬ বছরের যত গুম-ক্রসফায়ারের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ, পিলখানা ও হেফাজত ইসলামের কর্মীদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে অভিযোগ ট্রাইব্যুনালের কাছে এসেছে। সেগুলোর বিষয়ে তদন্ত চলমান আছে। আমরা বিশ্বাস করি শেখ হাসিনাসহ তার মন্ত্রিপরিষদের বিভিন্ন সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে, তাই প্রায়োরিটির ভিত্তিতে শেখ হাসিনার বিষয়ে তদন্ত খুব জোরেশোরে চলমান রয়েছে।
তিন মাসের মধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ হবে জানিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের যে তদন্ত সংস্থার রয়েছে তারা সম্ভাব্য তিন মাসের ভেতর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সব তদন্ত শেষ করতে পারবেন। এটা কোনো চূড়ান্ত কথা নয়, তারা (তদন্ত সংস্থা) আশা করছেন তিন মাসের মধ্যে শেষ করতে পারবেন। তদন্ত রিপোর্ট আমাদের হাতে এসে পৌঁছালে তখন আমরা বলতে পারব মূল বিচার প্রক্রিয়া কবে শুরু হবে। পাশাপাশি পুরো দেশে যেসব মামলা চলমান রয়েছে তা সব আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা সম্ভব নয়।
শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে জানতে চাইলে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, এটার জবাব চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয় দিতে পারবে না, এটা রাষ্ট্রের বিষয়। ভারতের সঙ্গে অপরাধী প্রত্যর্পণের যে চুক্তি আছে, সেই চুক্তির অধীনে অপরাধীদের দেশে ফেরানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রের নিতে হবে। সরকারের কাছে আমরা তথ্য প্রেরণ করেছি, সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কাছে কখন কীভাবে চাইবে বা ইতোমধ্যে চেয়েছে, কি না সেটা সরকার বলতে পারবে। এটা আমাদের জানা নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
ইএসএস/এমএম