ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

দেওয়ানি আদালত আইনের সংশোধনীর কার্যক্রম স্থগিত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১২ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৬
দেওয়ানি আদালত আইনের সংশোধনীর কার্যক্রম স্থগিত

ঢাকা: সিভিল কোর্টস অ্যাক্ট সংশোধন করে নিম্ন আদালতের দেওয়ানি বিচারকদের পাঁচ লাখ টাকার পরিবর্তে পাঁচ কোটি টাকা মূল্যমানের মামলা নিষ্পত্তির এখতিয়ার প্রদান করে যে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছিলো তার কার্যক্রম তিনমাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
 
এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বুধবার (১৫ জুন) বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।


 
রুলে সিভিল কোর্টস অ্যাক্ট  সংশোধনী আইন ২০১৬  কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
 
তিন সপ্তাহের মধ্যে আইনসচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারকে রুলের জবাব  দিতে বলা হয়েছে।
 
সিভিল কোর্টস অ্যাক্ট-১৮৮৭ সংশোধন করে গত ১২ মে গেজেট জারি করে সরকার। সে অনুযায়ী একজন সহকারী জজ দুই লাখ টাকার পরিবর্তে ১৫ লাখ টাকা, সিনিয়র সহকারী জজ চার লাখ টাকার পরিবর্তে ২৫ লাখ টাকা ও জেলা জজ পাঁচ লাখ টাকার পরিবর্তে পাঁচ কোটি টাকা মূল্যমানের মামলা নিষ্পত্তি করতে পারবেন। ফলে ৫ লাখ টাকার ওপর থেকে ৫ কোটি টাকা মূল্যমানের যেসব দেওয়ানি মামলায় হাইকোর্টে আপিল হয়েছে, সেগুলো নিম্ন আদালতে ফেরত যাওয়ার বিষয়টি উঠে আসে।
 
গত ০৫ জুন  আলী আজম ফরাজী নামের এক ব্যক্তি হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
 
আদালতে আবেদনের পক্ষে  শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ কে রাশেদুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।
 
পরে একে রাশেদুল হক বলেন, এ আইনের সংশোধনী স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ। ঐতিহাসিক মাসদার হোসেন মামলার রায় অনুযায়ী কোনো আইন সংশোধন করতে হলে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে আইন সংশোধন করতে হয়। কেননা, বিচার বিভাগের বিষয়ে সিদ্বান্ত নেওয়ার ক্ষমতা শুধুমাত্র সুপ্রিম কোর্ট নিতে পারেন। কিন্তু সিভিল কোর্টস অ্যাক্ট সংশোধন করে দেওয়ানি আদালতের বিচারকদের পাঁচ লাখ টাকার পরিবর্তে পাঁচ কোটি টাকা মূল্যমানের মামলা নিষ্পত্তির এখতিয়ার প্রদান করে নতুন আইন তৈরির ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে কোনো পরামর্শ করেনি সরকার।   তাই রিট আবেদন দায়েরের পর হাইকোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন আদেশসহ রুল জারি করেন।
 
এর আগে আরেকটি রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৩০ মে সিভিল কোর্টস অ্যাক্ট সংশোধন করে দেওয়ানি আদালতের বিচারকদের আর্থিক এখতিয়ার বৃদ্ধির ফলে হাইকোর্টের বিচারাধীন আপিলগুলো ফেরত যাওয়ার বিধান কেন বেআইনি ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
 
একই সঙ্গে এ সংশোধনীর ফলে হাইকোর্টের বিচারাধীন দেওয়ানি আপিল মামলাগুলো বিচারিক আদালতে ফেরত পাঠানোর ওপর তিনমাসের নিষেধাজ্ঞা নির্দেশ দেন।
 
সংশোধিত সিভিল কোর্টস অ্যাক্ট  সংশোধনী আইন ২০১৬  এর ৪ (৩) ধারায় বলা হয়েছে, ‘সংশোধিত আইনের ফলে উপরোক্ত মূল্যমানের হাইকোর্টে বিচারাধীন আপিলগুলো শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য জেলা জজ আদালতে ফেরত যাবে’।
 
এ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আগের রিট আবেদনটি করেন ব্যারিস্টার সাইদুল আলম খান, ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল সাঈদ ও ব্যারিস্টার শুভ্রদেব রাতুল।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৬
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।