ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

নিহত দুই বিচারককে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের স্মরণ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৬
নিহত দুই বিচারককে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের স্মরণ

২০০৫ সালে নিহত বিচারক সোহেল আহম্মেদ ও জগন্নাথ পাঁড়ের স্মরণে সভা করেছেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

ঢাকা: ২০০৫ সালে নিহত বিচারক সোহেল আহম্মেদ ও জগন্নাথ পাঁড়ের স্মরণে সভা করেছেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

সোমবার (১৪ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ে এ স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল (সিনিয়র জেলা জজ) সৈয়দ আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় আলোচনায় অংশ নেন হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন, স্পেশাল অফিসার হোসনে আরা আকতার, অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার এস এম এরশাদুল আলম ও সাব্বির ফয়েজ।

সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বিচার বিভাগের জন্য অনেকেরই অনেক অবদান রয়েছে। কিন্তু সেসব কিছু তুচ্ছ হয়ে যায় নিহত এই দুই বিচারকের আত্মত্যাগের কাছে’।

তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা যতো সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছি, তার অনেক কিছুর পেছনেই এই দু’জনের অবদান আছে। তারা অকালে শাহাদত বরণ করার পরেই সরকার আমাদের নিরাপত্তার জন্য গানম্যানের ব্যবস্থা করে। বিচারিক কর্মজীবনেও এই দু’জন বিচারক ছিলেন অতি উচ্চ মূল্যবোধের অধিকারী। তাদের চরম আত্মত্যাগ বিচার বিভাগের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে’।

আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন বলেন, ‘দুই বিচারক তাদের জীবন দিয়ে আমাদের ঋণী করে গেছেন। তারা আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা’।

হোসনে আরা আকতার বলেন, ‘তাদের মহান আত্মত্যাগকে শুধু স্মরণ করলেই হবে না, বিপদে-আপদে তাদের পরিবারের পাশে থাকতে হবে। গত বছরের বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে তাদের পরিবারকে আর্থিকভাবে সহায়তা করা হয়েছিল। সেটাই যেন শেষ না হয়। এবারও তাদের পরিবারকে স্মারক দিয়ে সম্মান জানানো উচিত’।

অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার এসএম এরশাদুল আলম বলেন, ‘জগন্নাথ পাঁড়ে এবং সোহেল আহমেদ ছিলেন আমার ব্যাচমেট। তবে জগন্নাথ পাঁড়ের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা ছিলো বেশি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার ক্লাসমেটও ছিলেন। এসএসসিতে বিজ্ঞান নিয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু বিচারক হওয়ার ইচ্ছাটা এতো বেশি প্রবল ছিলো যে, পরে বিজ্ঞান বাদ দিয়ে আইন পড়তে আসেন। বিচারক হয়ে মানুষের সেবা করাই ছিলো তার জীবনের লক্ষ্য। ঘাতকের বোমা তাকে অকালেই থামিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তার আদর্শকে থামাতে পারেনি’।

সাব্বির ফয়েজ স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘এমন হাসি-খুশি প্রাণোচ্ছ্বল দু’টি প্রাণ এমন অকালেই ঝরে যাবে, কখনো ভাবতে পারিনি। তারা প্রাণ দিয়ে বিচারকদের নিরাপত্তা ত্রুটির বিষয়টি সবাইকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছিলেন। এজন্য তাদের মূল্যটা অনেক বেশি দিতে হয়েছে। তাদের আত্নত্যাগের ঋণ কখনো শোধ করা সম্ভব নয়। আমাদের উচিত, তাদের পরিবারের সদস্যদের বিপদে-আপদে পাশে থাকা’।

২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠি আদালতের দুই বিচারক সোহেল আহমেদ এবং জগন্নাথ পাঁড়ে বোমা হামলায় মারা যান। সোমবার তাদের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী।

এই দুই বিচারক হত্যা মামলায় জেএমবি’র শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলাভাই, শায়খের ভাই আতাউর রহমান সানি, জামাতা আবদুল আউয়াল, ইফতেখার হোসেন মামুন, খালেদ সাইফুল্লাহ ফারুক ও আসাদুল ইসলাম আরিফের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে সরকার।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৬

ইএস/এএটি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।