ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

দুই শিশুর গ্রেফতার নিয়ে হাইকোর্টের রুল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৬
দুই শিশুর গ্রেফতার নিয়ে হাইকোর্টের রুল

‘খুনি সন্দেহে’ দুই শিশুর গ্রেফতার নিয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

ঢাকা: ‘খুনি সন্দেহে’ দুই শিশুর গ্রেফতার নিয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

 

জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিটের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।


 
রুলে ওই দুই শিশুকে গ্রেফতার করা শিশু আইনের ১৩, ১৪, ৪৪, ৪৫, ৪৭ ও ৫২ ধারার পরিপন্থি কেন ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
 
একইসঙ্গে ওই দুই শিশুর পরিবারকে কেন ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না- তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
 
চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, মুখ্য মহানগর হাকিম, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার, লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার ও কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
 
আদালতে রিট আবেদনকারী আইনজীবী চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মো. আব্দুল হালিম নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।
 
পরে আব্দুল হালিম বলেন,২৪ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘লাশের পরিচয় মেলেনি, খুনি সন্দেহে ২ শিশু গ্রেপ্তার’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট করা হয়। আদালত রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দিয়েছেন। আদেশে আগামী বছরের ০৪ জানুয়ারির মধ্যে ওই দুই শিশুর বয়স নির্ণয় করা হয়েছে কি-না সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দিতে লালবাগের ডিসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
 
ওই পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘প্রায় দুই মাস আগে পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয় এক শিশুর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছিল। ১০ দিন পর লাশটি নিখোঁজ এক শিশুর দাবি করে শিশুটির পরিবার খুনের মামলা করে। খুনি সন্দেহে পুলিশ দুই শিশুকে গ্রেপ্তার করে। বিচারিক হাকিম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়ে তাদের টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠান’।

‘এর আগে অভিযোগকারী পরিবার ও পুলিশ অভিযুক্ত শিশুদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের স্বীকারোক্তি নেয়। এ সবই ঘটে দুই দিনের মধ্যে। আরও পরে জিজ্ঞাসাবাদের দু’টি ভিডিও ক্লিপ ফেসবুকে তুলে দেন নিখোঁজ শিশুটির এক ফুফাতো বোন’।

‘লাশটির পরিচয় কিন্তু অজানাই আছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন বলছে, সে পানিতে ডুবে মারা গেছে। অভিযুক্ত দুই শিশু বলছে, মারধর করে তাদের মিথ্যা দায় স্বীকার করতে বাধ্য করা হয়েছে’।

‘মামলাটি হয়েছে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থানায়। পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয় শিশুটির লাশ উদ্ধার করে গত ১ অক্টোবর রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের কালুনগর খাল থেকে। বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম সেটা দাফন করে’।
‘এদিকে ২৯ সেপ্টেম্বর লালবাগ এলাকা থেকে আলিফ নামের নয় বছর বয়সী এক শিশু নিখোঁজ হয়েছে বলে স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন তার বাবা উজ্জ্বল ভূঁইয়া’।

‘১১ অক্টোবর রাত ১০টার দিকে আলিফের বাবা বাদী হয়ে কামরাঙ্গীরচর থানায় শিশু দু’টির (শিশু হওয়ায় তাদের নাম উল্লেখ করা হচ্ছে না) নামে খুনের মামলা করেন। এজাহারে তিনি লেখেন, অজ্ঞাতপরিচয় লাশটি তাঁর ছেলের। ওই দুই শিশু মিলে আলিফকে গলা টিপে হত্যা করে কালুনগর খালের পানিতে ডুবিয়ে দিয়েছে। আলিফের বাবা তখনই এক শিশুকে পুলিশে সোপর্দ করেন। পুলিশ রাত দেড়টার দিকে অপর শিশুকে গ্রেপ্তার করে’।
 
‘শিশু আইন, ২০১৩ অনুযায়ী, নয় বছরের কম বয়সী কোনো শিশুকে গ্রেপ্তার কিংবা আটক করা যাবে না (ধারা ৪৪/১)’।
 
‘মামলার এজাহারে শিশু দু’টির বয়স বলা হয়েছে ১২ বছর। কিন্তু অভিভাবকেরা বলছেন, তাদের বয়স নয় বছরের কম। আদালতে জন্মসনদ দাখিল করে মামলা থেকে এক শিশুর অব্যাহতি চেয়েছেন তার আইনজীবী। ওই সনদে দেখা যায়, তার জন্ম তারিখ ২৯ জানুয়ারি, ২০০৮। আদালত জামিনের আবেদন নাকচ করে দেন’।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৬
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।