ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

মওদুদের মামলা শুনতে ব্রিবত হাইকোর্ট

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০১৭
মওদুদের মামলা শুনতে ব্রিবত হাইকোর্ট

ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের নাইকো দুর্নীতি মামলার বিষয়ে রুল শুনানিতে বিব্রতবোধ করেছেন হাইকোর্ট।

বুধবার (০৪ জানুয়ারি) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চে বিব্রতবোধের পর মামলাটি এখন প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হয়েছে।

 
আদালতে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ নিজেই শুনানি করেন।

দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান শুনানি করেন।


তিনি বলেন, ওই বেঞ্চের একজন বিচারপতি বিব্রতবোধ করেছেন। নিয়মানুযায়ী, বিষয়টি এখন প্রধান বিচারপতির কাছে যাবে। প্রধান বিচারপতি রুলটি শুনানির জন্য নতুন কোনো বেঞ্চে পাঠাবেন।


মওদুদ আহমদের করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ০১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিচারপতি শেখ আব্দুল আউয়াল ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশে দেন।

এরপর ১১ ডিসেম্বর মওদুদ আহমদের নাইকো দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে হাইকোর্টের জারি করা রুল ১৯ জানুয়ারির মধ্যে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে নিস্পত্তির নির্দেশও দেওয়া হয়।

সে অনুসারে বিষয়টি উক্ত বেঞ্চে শুনানির জন্য উঠে।

ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে বিচার কার্যক্রম চলা অবস্থায় মওদুদ আহমদ এ মামলায় আরও কিছু নথি তলব চেয়ে এবং ওয়াশিংটনে নাইকোর বিষয়ে চলা আরবিট্রশেন শেষ না হওয়া পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু ১৬ আগস্ট বিচারিক আদালত এ আবেদন খারিজ করে দেন। পরে মওদুদ আহমদ এর বিরুদ্ধে ফৌজদারি আবেদন করেন হাইকোর্টে।

 
হাইকোর্ট আট সপ্তাহের জন্য মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে চার সপ্তাহের রুল জারি করেন। রুলে ১৬ আগস্টে বিচারিক আদালতের দেওয়া আদেশ কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়েছেন।  

মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, সেনানিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় খালেদা জিয়া গ্রেফতার হওয়ার পর ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বরে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় এই মামলা করে দুদক। পরের বছর ৫ মে খালেদাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন। মামলা হওয়ার পর খালেদা জিয়া উচ্চ আদালতে গেলে ২০০৮ সালের ৯ জুলাই দুর্নীতির এই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্ট, সেই সঙ্গে দেওয়া হয় রুল। প্রায় সাত বছর পর গত বছরের শুরুতে রুল নিষ্পত্তির মাধ্যমে মামলাটি সচল করার উদ্যোগ নেয় দুদক। রুলের ওপর শুনানি শেষে গত বছর ১৮ জুন খালেদার আবেদন খারিজ করে মামলার ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেয় হাইকোর্ট। ওই রায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী গত বছর ৩০ নভেম্বর খালেদা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান।

খালেদা ও মওদুদ ছাড়া এ মামলার বাকি আসামিরা হলেন- সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তখনকার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, বিতর্কিত ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া (সিলভার সেলিম) এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ। এদের মধ্যে মিয়া ময়নুল হক, কাশেম শরীফ ও কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী পলাতক রয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৭
ইএস/বিএস

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।