একইসঙ্গে তাদের মামলার নথি তলব করে কেন জামিন দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে হবে।
বৃহস্পতিবার (০৫ জানুয়ারি) বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন।
দু’জন হলেন-শফিকুল ইসলাম স্বপন ও ছাবেদ আলী।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল ওই দু’জনকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রচার করে। প্রচারিত প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির প্যানেল আইনজীবী কুমার দেবুল দে।
টিভি চ্যানেলে প্রচারিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কারাগারের নথিতে তাদের দু'জনই মানসিক রোগী। অথচ একজন ১৬ বছর ও আরেকজন ১৪ বছর ধরে কারাগারে। একদিকে ঝুলছে মামলা, অন্যদিকে পাচ্ছেন না পর্যাপ্ত চিকিৎসা। আবার অর্থাভাবে মামলাও ঠিকমতো চালাতে পারছে না পরিবার। সব মিলিয়ে এক অনিশ্চিত যাত্রা দুই কারাবন্দির’।
‘তাদের মধ্যে একজন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার হোসেন্দী পূর্ব পাড়ার মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে শফিকুল ইসলাম স্বপন। কারাগারে যাওয়ার পর থেকে চোখের পানিই যেন এখন সঙ্গী তার মা রহিমা বেগমের। শেষ বয়সের দিনগুলো কাটে প্রতিবেশীদের দান ও সামান্য সহযোগিতায়। তিন সন্তানের মধ্যে একজনই ছেলে স্বপন ২০০১ সালে পাকুন্দিয়া থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় প্রায় ১৬ বছর ধরে আছেন কারাগারে। তাও আবার মানসিকভাবে অসুস্থ। অর্থাভাবে মামলা চালাতে পারছেন না। ছেলেকে সুস্থ দেখতে চান, মামলাটিরও সুরাহা চান। কিন্তু কোথায়, কিভাবে আর কার কাছে যাবেন- জানেন না’।
‘১৯ বছর বয়সে স্বপন ২০০১ সালের ২৫ এপ্রিল থেকে কিশোরগঞ্জ কারাগারে। এ পর্যন্ত মামলায় হাজিরা দিয়েছেন ১০০ বার। কারাগারের নথিতে মানসিক রোগী হিসেবে নাম তার। কিন্তু জন্ম থেকেই কি মানসিক রোগী স্বপন? আর কারাসূত্র বলছে, স্বপনের চিকিৎসার জন্য কয়েকবার ময়মনসিংহ ও পাবনা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ চিকিৎসার সুযোগ পাননি তিনি।
‘একই অবস্থা পাকুন্দিয়ার এগার সিন্দুর এলাকার মুসলিম মিয়ার ছেলে ছাবেদ আলীর। ২০০৩ সালে ওই থানায় করা এক মামলায় ওই বছরের ২৯ জুন থেকে কারাগারে আছেন। এ পর্যন্ত তাকে ৯১ বার আদালতে হাজিরও করা হয়েছে। কিন্তু শেষ হয়নি মামলার বিচার’।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১৭
ইএস/এএসআর