একটি রিটের শুনানি নিয়ে সোমবার (০৯ জানুয়ারি) এ আদেশ দেন বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) আদালতের এ আদেশ বাস্তবায়ন করে ছয় সপ্তাহের মধ্যে একটি প্রতিবেদন দাখিল করবে।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর একটি দৈনিকে ‘দুর্বোধ্য ব্যবস্থাপত্র: ভুল ওষুধ গ্রহণের ঝুঁকিতে রোগীরা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদন যুক্ত করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ রিট আবেদন করে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোখলেছুর রহমান।
পরে মনজিল মোরসেদ জানান, স্পষ্ট অক্ষরে বা বড় অক্ষরে পড়ার উপযোগী করে ব্যবস্থাপত্র লেখা অথবা প্রিন্টেড কপিতে ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার নির্দেশনা ছাড়াও রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রুলে রোগীদের জন্য স্পষ্টভাবে ব্যবস্থাপত্র লেখায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং ব্যবস্থাপত্রে জেনেরিক নাম লেখার কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়েছেন।
চার সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্যসচিব, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বর্তমানে দেশে প্রায় ৩০ হাজার ওষুধের ব্র্যান্ড রয়েছে। এসব ওষুধের নাম মনে রাখা সংশ্লিষ্টদের পক্ষে অনেক কঠিন। এর সঙ্গে দুর্বোধ্য ব্যবস্থাপত্রের সংযুক্তি সঠিক চিকিৎসাকে আরো কঠিন করে তুলেছে’।
‘পুরান ঢাকার প্রবীণ এক ফার্মেসির মালিক জানান, চিকিৎসকদের দুর্বোধ্য লেখার কারণে রোগীদের পাশাপাশি আমরাও ভোগান্তিতে পড়ি। অনেক ফার্মেসি ওষুধটির প্রকৃত নাম না জেনেই হয়তো তা রোগীকে দিয়ে দেন। অনেক দোকানির পক্ষে অস্পষ্ট লেখা পড়া সম্ভব হয় না। দুর্বোধ্য লেখার পেছনে কিছু চিকিৎসকের অনৈতিক লেনদেনকেও দায়ী করছেন কেউ কেউ’।
‘বিশেষজ্ঞদের মতে, চিকিৎসকদের দুর্বোধ্য লেখার কারণে ভুল ওষুধ গ্রহণের মাত্রা বাড়ছে। ফলে শরীরে বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে। আর কাঙ্ক্ষিত ওষুধ না পেয়ে রোগী ও তার স্বজনদের ভোগান্তি তো রয়েছেই। এজন্য বড় (ক্যাপিটাল লেটার) ছাপার অক্ষরে ব্যবস্থাপত্র লেখার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। এতে রোগী, স্বজন ও দোকানিদের পক্ষেও ব্যবস্থাপত্র বোঝা সহজ হবে, যা চিকিৎসা বিড়ম্বনা কমাবে অনেকাংশে। সম্প্রতি ভারতে দেশটির উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থাপত্রে বড় ছাপার অক্ষরে লেখা চালু হয়েছে’।
বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৬
ইএস/এএসআর