ওই এলাকার পাহাড় কাটা নিয়ে জারি করা এক রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতের এ রায় বাস্তবায়ন করতে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে (এসপি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০১৫ সালের ২২ আগস্ট দৈনিক কালের কণ্ঠে ‘ হবিগঞ্জ-পাহাড় কাটা থামছে না’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদন যুক্ত করে পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে ওই বছরের ১৩ ডিসেম্বর রিট দায়ের করা হয়। ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট পাহাড় কাটার ওপর স্থিতাবস্থা জারি করে রুল জারি করেন।
এ রুলের শুনানি শেষে চূড়ান্ত রায় দেওয়া হয়।
রিট আবেদনের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, নবীগঞ্জের দিনারপুরে পাহাড় ও টিলা কাটা রোধে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া হবিগঞ্জ জেলার ডিসি ও এসপিকে গোটা জেলায় পাহাড় ও টিলা সংরক্ষণে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
দৈনিক কালের কণ্ঠের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়,‘কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না পাহাড় কাটা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হিসেবে খ্যাত হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দিনারপুরে অবাধে পাহাড় ও টিলা কেটে উজাড় করা হচ্ছে। কিছুদিন বন্ধ থাকার পর প্রায় দুই মাস ধরে ওই পরগনার সবচেয়ে উঁচু পাহাড় মিরের টিলা কেটে উজাড় করছে প্রভাবশালী মহল’।
‘স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নবীগঞ্জ উপজেলার বনগাঁও গ্রামের মৃত নওয়াব উল্লার ছেলে সোনা মিয়াসহ একটি প্রভাবশালী মহল ওই পাহাড় কাটায় জড়িত। তারা প্রকাশ্যে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। পাহাড় কাটার কারণে পাহাড় ও টিলা ধসে মৃত্যুর ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। পরিবেশেরও ভারসাম্য হারাচ্ছে। পাহাড় কাটায় দিনারপুর এলাকার প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য হারিয়ে যাচ্ছে’।
‘গত সাত বছরে নবীগঞ্জের দিনারপুরে পাহাড়ের মাটিচাপা পড়ে একই পরিবারের ছয়জনসহ অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগই কাটা হয়েছে আবাসিক প্রকল্প, বাণিজ্যিক মার্কেট কিংবা ঘর-বাড়ি তৈরির মাটি ভরাটের জন্য। ইদানিং মাধবপুরে চালু হওয়া সিরামিক কারখানা এবং বিবিয়ানার বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পেও এখান থেকে মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৭
ইএস/এএসআর