ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে একজন পদস্থ কর্মকর্তার মাধ্যমে আদালতে এ আদেশ পালন করতে হবে।
আদালতে রিট আবেদনকারী আইনজীবী চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মো. আব্দুল হালিম নিজেই শুনানি করেন।
পরে আব্দুল হালিম বলেন, গত ২৪ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘লাশের পরিচয় মেলেনি, খুনি সন্দেহে ২ শিশু গ্রেফতার’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট করা হয়। ২৯ নভেম্বর আদালত রুলসহ ওই দুই শিশুর বয়স নির্ণয় করা হয়েছে কি-না সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ মতে ০৪ জানুয়ারি লালবাগের ডিসি ও কামরাঙ্গীচরের ওসি আদালতে প্রতিবেদন দেন।
রোববার সেই প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত দুই শিশুকে হাজিরের নির্দেশ দেন।
আব্দুল হালিম আরও বলেন, আদালতের রুল জারির পর পুলিশ দুই শিশুর বয়স নির্ণয়ে ব্যবস্থা নেন। এ কারণে ওই দুই কর্মকর্তাকে আদালতে হাজিরের আবেদন করি। আদালত তাদের হাজিরের আদেশ না দিয়ে দুই শিশুকে হাজিরের নির্দেশ দেন।
ওই পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় দুই মাস আগে পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয় এক শিশুর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে। ১০দিন পর লাশটি এক নিখোঁজ শিশুর দাবি করে শিশুটির পরিবার খুনের মামলা করে। এরপর খুনি সন্দেহে পুলিশ দুই শিশুকে গ্রেফতার করে। বিচারিক হাকিম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়ে তাদের টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠান।
এর আগে অভিযোগকারী পরিবার ও পুলিশ অভিযুক্ত শিশুদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের স্বীকারোক্তি নেয়। এ সবই হয় দু’দিনের মধ্যে। আরও পরে জিজ্ঞাসাবাদের দু’টি ভিডিও ক্লিপ ফেসবুকে তুলে দেন নিখোঁজ শিশুটির এক ফুফাতো বোন।
ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন বলছে, অজ্ঞাত পরিচয় শিশুটি পানিতে ডুবে মারা গেছে। এদিকে অভিযুক্ত দুই শিশু জানিয়েছে তাদের মারধর করে মিথ্যা দায় স্বীকার করতে বাধ্য করা হয়েছে।
এ ঘটনায় রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থানায় মামলা করা হয়। পুলিশ গত ১ অক্টোবর রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের কালুনগর খাল থেকে অজ্ঞাতপরিচয় শিশুটির লাশ উদ্ধার করে। বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে শিশুটিকে দাফন করা হয়। এদিকে ২৯ সেপ্টেম্বর লালবাগ এলাকা থেকে আলিফ নামের নয় বছর বয়সী এক শিশু নিখোঁজ হয়েছে বলে স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার বাবা উজ্জ্বল ভূঁইয়া।
গত ১১ অক্টোবর রাত ১০টার দিকে আলিফের বাবা বাদী হয়ে কামরাঙ্গীরচর থানায় অভিযুক্ত দুই শিশুর নামে খুনের মামলা করেন।
মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, অজ্ঞাতপরিচয় লাশটি তার ছেলের। ওই দুই শিশু মিলে আলিফকে গলা টিপে হত্যা করে কালুনগর খালের পানিতে ডুবিয়ে দিয়েছে। আলিফের বাবা সেদিনই এক শিশুকে পুলিশে সোপর্দ করেন। পুলিশ রাত দেড়টার দিকে অপর শিশুকে গ্রেফতার করে।
শিশু আইন, ২০১৩ অনুযায়ী, নয় বছরের কম বয়সী কোনো শিশুকে গ্রেফতার কিংবা আটক করা যাবে না (ধারা ৪৪/১)।
মামলার এজাহারে শিশু দু’টির বয়স বলা হয়েছে ১২ বছর। কিন্তু অভিভাবকেরা বলছেন, তাদের বয়স নয় বছরের কম। আদালতে জন্মসনদ দাখিল করে মামলা থেকে এক শিশুর অব্যাহতি চেয়েছেন তার আইনজীবী। ওই সনদে দেখা যায়, তার জন্মতারিখ ২৯ জানুয়ারি, ২০০৮। আদালত জামিনের আবেদন নাকচ করে দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৭
ইএস/আরআর/এসএইচ