ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ষোড়শ সংশোধনী ‍অবৈধের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১৭
ষোড়শ সংশোধনী ‍অবৈধের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ সুপ্রিম কোর্ট

ঢাকা: উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণে সংসদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ করে দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (০১ আগস্ট) সকালে ৭৯৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশিত হয় বলে জানান হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার সাব্বির ফয়েজ।

গত ০৩ জুলাই হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে সর্বসম্মতিক্রমে চূড়ান্ত রায়টি দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলও খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত।

ফলে মহাজোট সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আর টিকলো না।

সেদিন রিট আবেদনকারী আইনজীবীদের পক্ষে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানিয়েছিলেন, রাষ্ট্রপক্ষের আপিল খারিজ করেছেন আপিল বিভাগ। তবে হাইকোর্টের রায়ের কিছু শব্দ বাদ দেবেন বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন।

এখন বিচারক অপসারণ কিভাবে হবে?- প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আগের পদ্ধতিতে সুপ্রিম কোর্ট জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে হবে।

২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়।
 
সংবিধানের এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ০৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয় আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ০৯ নভেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

রুলের শুনানি শেষে গত বছরের ০৫ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেন বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ।

এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেন। আপিল শুনানি শুরুর আগে গত ০৮ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ ১২ জন অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দেন।

গত ০৮ মে থেকে ০১ জুন পর্যন্ত ১১ কার্যদিবসে উভয়পক্ষ আপিল শুনানি ও যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন এবং ১০ জন অ্যামিকাস কিউরি ও সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু তার মতামত উপস্থাপন করেন।  
 
সাত কার্যদিবসে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও আইন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা এবং রিট আবেদনকারী আইনজীবীদের পক্ষে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। শুরুতে হাইকোর্টের দেওয়া রায় পড়ে শোনান মুরাদ রেজা। সবশেষে আপিলকারী ও বিবাদী উভয়পক্ষ পরস্পরের যুক্তিতর্কের জবাব দেন।

১০ অ্যামিকাস কিউরি বাকি চার কার্যদিবসে তাদের মতামত উপস্থাপন করেন। এর মধ্যে নয়জন বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের (বিচারকদের হাতে) কাছে রাখা বা ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পক্ষে মত দেন।

ওই নয় অ্যামিকাস কিউরি হলেন- টি এইচ খান, ড. কামাল হোসেন, আবদুল ওয়াদুদ ভূইয়া, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল-ইসলাম, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, এ জে মোহাম্মদ আলী, এএফ হাসান আরিফ, এম আই ফারুকী ও ফিদা এম কামাল।
 
বাকি একজন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন সিউসি ষোড়শ সংশোধনীকে বৈধ বলে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে রাখার পক্ষে মত দেন।
 
অন্য দুই অ্যামিকাস কিউরি রফিক-উল হক ও শফিক আহমেদ অসুস্থ থাকায় মতামত দিতে পারেননি।

গত ০১ জুন শুনানি শেষে রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখেন আপিল বিভাগ।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০১৭
ইএস/বিএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।