ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্যসচিবকে হাইকোর্টে তলব

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৭
২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্যসচিবকে হাইকোর্টে তলব

ঢাকা: রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের দুই কর্মকর্তার অদক্ষতা ও অযোগ্যতার বিষয়ে ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থাস্থ্যসচিবকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।

আগামী বুধবার (২৩ আগস্ট) হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে তাকে।

সোমবার (২১ আগস্ট) বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

তিনি বলেন, রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় আদালতের রায়ে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের দুই কর্মকর্তার অদক্ষতা ও অযোগ্যতা এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে অবহেলার বিষয়টি উঠে আসে। এরপর তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে- তা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।

ওই দুই কর্মকর্তা হলেন- ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম ও উপ-পরিচালক আলতাফ হোসেন।

স্বাস্থ্যসচিবের পক্ষে সোমবার এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। যাতে বলা হয়-ওই দুই কর্মকর্তাকে সতর্ক করা হয়েছে। অথচ আদালত জানতে চেয়েছিলেন- কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ব্যবস্থা না নেওয়ায় ব্যাখ্যা দিতে স্বাস্থ্য সচিবকে ২৩ আগস্ট তলব করেছেন হাইকোর্ট।

২০০৯ সালে রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে সারাদেশে ২৮ জন শিশু মারা যায়। এ ঘটনায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। মামলার বিচার শেষে গত বছরের ২৮ নভেম্বর পাঁচজনকে খালাস দেন বিচারিক আদালত।

ওই রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারিক আদালত বলেছিলেন, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর মামলাটি করার ক্ষেত্রে ১৯৮০ সালের ড্রাগ আইন যথাযথভাবে অনুসরণ করেনি। মামলায় যথাযথভাবে আলামত জব্দ করা, তা রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পাঠানো এবং রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন আসামিদের দেওয়া হয়নি। এ ক্ষেত্রে ড্রাগ আইনের ২৩, ২৫ ধারা প্রতিপালন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে তৎকালীন ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেন চরম অবহেলা, অযোগ্যতা ও অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।

এদিকে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে পরে আপিল করেন রাষ্ট্রপক্ষ। গত ০৯ মার্চ ওই আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট।

মনজিল মোরসেদ বলেন, শিশু মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ওই দুইজনের অদক্ষতা প্রমাণিত হওয়ার পরও তারা বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। গত ১৬ মার্চ সম্পূরক আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ওই দু’জনের বিষয়ে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে- তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর ১১ জুলাই প্রতিবেদন দাখিল করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এতেও ওই দুই কর্মকর্তার অবহেলা দেখা যায়।

এ অবস্থায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিতে আরেকটি আবেদন দাখিল করা হয়। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ০৩ আগস্ট হাইকোর্ট প্রতিবেদনের আলোকে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে- তা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৭
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।