ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

অবশেষে ওষুধ প্রশাসনের দুই কর্তা বরখাস্ত,সচিবকে অব্যাহতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৭
অবশেষে ওষুধ প্রশাসনের দুই কর্তা বরখাস্ত,সচিবকে অব্যাহতি

ঢাকা: রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় অদক্ষতা ও অযোগ্যতার বিষয়টি ওঠে আসায় অবশেষে ওধুধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে আদালতকে অবহিত করেছেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব।

এরপর আদালত সচিবকে অব্যাহতি দিয়ে বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো.আতাউর রহমান খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদেশের পর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, ওই দুই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করে আদালতে স্বাস্থ্য সচিব প্রতিবেদন দিয়েছেন।

এরপর আদালত তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহিত দিয়েছেন।  
 
এর আগে বুধবার যথাযথ ব্যাখ্যা না দেওয়ায় ফের সচিবকে তলব করা হয়েছিলো। সে অনুসারে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেন সচিব।  
 
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। ওষুধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। সচিবের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী।  


গত ২১ আগস্ট স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবকে তলব করেছিলো হাইকোর্ট। সে অনুসারে বুধবার হাজির হন সচিব।
 
মনজিল মোরসেদ বলেন, রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় আদালতের রায়ে ওধুধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার অদক্ষতা ও অযোগ্যতা এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে অবহেলার বিষয়টি উঠে আসার পর তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।

এরপর স্বাস্থ্য সচিবের পক্ষে সোমবার একটি প্রতিবেদন দেওয়া হয়। যাতে বলা হয়-ওই দুই কর্মকর্তাকে সতর্ক করা হয়েছে। অথচ আদালত জানতে চেয়েছিলো কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ব্যবস্থা না নেওয়ায় ব্যাখ্যা দিতে স্বাস্থ্য সচিবকে ২৩ আগস্ট তলব করেছেন হাইকোর্ট।

ওই দুই কর্মকর্তা হলেন- ওষুধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম ও উপ-পরিচালক আলতাফ হোসেন।


২০০৯ সালে রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে সারাদেশে অনেক শিশু মারা যায়। এ ঘটনায় ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পক্ষ থেকে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলার বিচার শেষে গত বছরের ২৮ নভেম্বর পাঁচজনকে খালাস দেন বিচারিক আদালত।

ওই রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারিক আদালত বলেছিলেন, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর মামলাটি করার ক্ষেত্রে ১৯৮০ সালের ড্রাগ আইন যথাযথভাবে অনুসরণ করেনি। মামলায় যথাযথভাবে আলামত জব্দ করা, তা রাসায়নিক পরীক্ষাগারে প্রেরণ এবং রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন আসামিদের দেওয়া হয়নি। এ ক্ষেত্রে ড্রাগ আইনের ২৩, ২৫ ধারা প্রতিপালন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে তৎকালীন ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেন চরম অবহেলা, অযোগ্যতা ও অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।

এ দিকে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে পরে হাইকোর্টে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওই আপিল শুনানির জন্য ০৯ মার্চ দিন ধার্য করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৭
ইএস/বিএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।