ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

খুলনায় শিশু হাসমি হত্যার দায়ে মাসহ চারজনের ফাঁসি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৭
খুলনায় শিশু হাসমি হত্যার দায়ে মাসহ চারজনের ফাঁসি বাম থেকে, শিশু হাসমির বস্তা ভর্তি সেই মরদেহ ও মা সোনিয়া আক্তার

খুলনা: খুলনায় ৯ বছরের শিশু হাসমি মিয়াকে হত্যার দায়ে মা সোনিয়া আক্তারসহ চারজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। ৫ আসামির মধ্যে অন্যজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

 

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন- মো. নুরুন্নবী, মো. রসুল ও মো. হাফিজুর রহমান। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পেয়েছেন রাব্বি সরদার।

 

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ দিলরুবা সুলতানার আদালত চাঞ্চল্যকর ও রোমহর্ষক মামলাটির এ রায় ঘোষণা করেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০০৬ সালে মহানগরীর আড়ংঘাটা থানার মানিকতলা এলাকার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন খানের মেয়ে সোনিয়ার সঙ্গে মো. হাফিজুর রহমানের বিয়ে হয়। বিয়ের ৬ মাস পর হাফিজুর রহমান বিদেশ চলে যান। স্বামীর অনুপস্থিতিতে সোনিয়ার চলাফেরা উচ্ছৃঙ্খল হতে থাকে। বেশ কয়েকজন যুবকের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। দেশে ফিরে বিষয়টি জানতে পারেন স্বামী হাফিজুর রহমান। এরপর তিনি স্ত্রীকে শোধরানোর চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে তালাক দেন স্ত্রীকে। হাসমি থেকে যায় বাবার সঙ্গে।  

পরে হাসমিকে তার বাবার কাছ থেকে অপহরণ করে আনতে নুরুন্নবী ও রসুলের সঙ্গে ৫০০ টাকা ও অনৈতিক কাজের চুক্তি হয় সোনিয়ার।

গত বছরের ০৬ জুন রাত পৌনে ৯টার দিকে শিশু হাসমিকে অপহরণ করে তার মায়ের কাছে নিয়ে আসেন অপহরণকারীরা। এরপর চুক্তি অনুসারে সরদারডাঙ্গা বাগানের (বাঁশঝাড়) মধ্যে সোনিয়ার সঙ্গে পর্যায়ক্রমে অনৈতিক কাজ করেন তারা, যা দেখে ফেলে শিশু হাসমি।  

এ ঘটনা বাইরে ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে মা সোনিয়ার সামনেই হাসমিকে মুখ চেপে ধরে গলায় ছুরি চালিয়ে হত্যা করেন অপহরণকারীরা। হত্যার পর মরদেহ গুম করতে ওই রাতেই সিমেন্টের বস্তায় ভরে খুলনা বাইপাস সড়ক সংলগ্ন সরদারডাঙ্গা বিলের মধ্যে ফেলে দেন।

পরে ০৯ জুন সকালে বিলটি থেকে বস্তাবন্দি হাসমির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় সেদিনই হাসমির বাবা মো. হাফিজুর রহমান বাদী হয়ে মো. নুরুন্নবী, হাফিজুর রহমান, মো. রসুলের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২/৩ জনের বিরুদ্ধে অপহরণের পর হত্যা ও মরদেহ গুমের মামলা করেন (নং-০২)।

মামলাটির প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা আড়ংঘাটা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মিজানুর রহমান একই বছরের ৩০ জুন এজাহারভুক্ত হাফিজুর রহমান ও আসাদ ফকিরকে বাদ দিয়ে সোনিয়া আক্তার, মো. নুরুন্নবী ও মো. রসুলের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। ওই চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন জানান বাদী।  

আদালতের নির্দেশে ফের তদন্ত শেষে সিআইডি’র পরিদর্শক মিঠু রানী দাস গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর ৭ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিট গ্রহণ করে মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত মামলাটি বিচারের জন্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠান।  

গত ০২ এপ্রিল অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত চার্জশিটভুক্ত দু’জন আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করে এ মামলার বিচার শুরু করেন। অভিযুক্ত ৫ আসামি হলেন- মা সোনিয়া আক্তার, মো. নুরুন্নবী, মো. রসুল, মো. হাফিজুর রহমান ও রাব্বি সরদার। অব্যাহতি পাওয়া দু’জন হলেন- মো. জসিম খান ও মো. আসাদ ফকির।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৭/আপডেট: ১২২৪ ঘণ্টা
এমআরএম/এমএ/জেডএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।