বুধবার (০৬ ডিসেম্বর) ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রহমান সরদার এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত সালেহা খাতুন চাঁদপুর জেলার উত্তর মতলবের আইঠাদি মাথাভাঙ্গার মৃত সিরাজুল ইসলাম মাস্টারের মেয়ে।
বিচারক রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, বর্তমান সমাজে পাষণ্ড স্বামী কর্তৃক স্ত্রী হত্যার ঘটনা যেমন ঘটেছে, ঠিক তেমনিভাবে পাষণ্ড স্ত্রী কর্তৃক স্বামী হত্যার মতো ঘটনাও অহরহ ঘটছে। দেশে আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠাকল্পে এ ধরনের মামলার আসামির উপযুক্ত বিচার হওয়া আবশ্যক। ফলে এ মামলার আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দিলে, এ ধরনের নির্মম, নিষ্ঠুর ও নৃশংসভাবে স্বামীর লিঙ্গ কর্তনসহ গলার শ্বাসনালী কাটার মতো ভয়ংকর হত্যাসহ এ জাতীয় অভিশাপ থেকে সমাজকে মুক্তি দেওয়া সম্ভব না।
আসামি যে অপরাধ করেছে তা খুবই মর্মান্তিক, বিভীষিকাময়, নারকীয় এবং ভয়ংকর। এই অপরাধ সভ্য সমাজের মানুষের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য ও সহনীয় নয় বলে পর্যবেক্ষণে মন্তব্য করেন বিচারক।
মামলায় বলা হয়, সৈনিক মহসীন তার স্ত্রী সালেহা খাতুন এবং দুই ছেলে প্রান্ত ও প্রিয়ন্তকে নিয়ে পল্লবীতে স্থায়ীভাবে বাস করতেন। মহসীনের সাথে সংসার করাকালে সালেহা বিভিন্ন লোকজনের সাথে অবৈধ ও পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে তোলেন। যার ফলে তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি ও মারামারি লেগেই থাকতো।
২০১২ সালের ২৬ অক্টোবর সালেহা খাতুন শরীফ চৌধুরী আপন, সুরুজ মিয়াসহ ৫/৭ জনকে পরকীয়া প্রেমিকের সহায়তায় মহসীনের লিঙ্গ ও অণ্ডকোষ পুরোটাই শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে। গলার শ্বাসনালী ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে ফেলে। এরপর মহসীনকে সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই ঘটনায় নিহতের ভাই মো. মজনু মিয়া বাদী হয়ে পল্লবী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট থানার এসআই বিপ্লব কুমার শীল পরের বছরের ২১ জানুয়ারি সালেহা খাতুনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার বিচারকাজ চলাকালে আদালত ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৭
এমআই/এমজেএফ