মঙ্গলবার (০২ জানুয়ারি) দায়িত্বরত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৫ বিচারপতির বেঞ্চ এ বিষয়ে আদেশের জন্য ৭ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করেন।
আদালতে নাজমুল হুদা নিজেই শুনানি করেন।
পরে খুরশীদ আলম খান বলেন, লিভ টু আপিলের জন্য এফিডেফিট করতে অনুমতির আবেদন করেছেন তিনি (নাজমুল হুদা)। আদালত এ বিষয়ে আদেশের জন্য ৭ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করেছেন।
গত ৮ নভেম্বর হাইকোর্ট দুর্নীতির এক মামলায় নাজমুল হুদাকে চারবছর কারাদণ্ড এবং স্ত্রী সিগমা হুদাকে তার কারাভোগকালীন সময়কে সাজা হিসেবে ঘোষণা করেন। আদালত ওই রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৪৫দিনের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলেন।
রায়ের পর আত্মসমর্পণ ছাড়াই নাজমুল হুদা হাইকোর্টের সাজার বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের জন্য আবেদন (এফিডেফিট) করার অনুমতি চান।
শুনানিকালে আদালত বলেন, রুলসে এটার সুযোগ নেই। আগে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
জবাবে নাজমুল হুদা বলেন, এ মামলায় আপিল বিভাগের দেওয়া আগের আদেশ আইন সম্মত হয়নি।
তখন আদালত বলেন, আপিল বিভাগের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করার সুযোগ নেই। আপিল বিভাগের আদেশ অমান্য করায় ভারতের এক বিচারপতির ছয়মাসের কারাদণ্ড হয়েছিল।
এ পর্যায়ে নাজমুল হুদা বলেন, এ বিষয়ে অনেক নজির আছে। আমাকে সময় দেওয়া হোক। আমি দেখাতে পারবো। এরপর আদালত আগামী ৭ জানুয়ারি আদেশের দিনধার্য করেন।
নাজমুল হুদা ও তার স্ত্রী সিগমা হুদার বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ২১ মার্চ দুদকের উপ-পরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম ধানমণ্ডি থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছিল, সাপ্তাহিক পত্রিকা 'খবরের অন্তরালে'র জন্য মীর জাহের হোসেনের কাছ থেকে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন নাজমুল হুদা ও তার স্ত্রী সিগমা হুদা।
২০০৭ সালের ২৭ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ আদালত মামলাটির রায়ে নাজমুল হুদাকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও আড়াই কোটি টাকা জরিমানা করেন। আর তার স্ত্রী সিগমা হুদাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
খুরশীদ আলম খান জানান, নাজমুল হুদার সাজা কমেছে তিন বছর। তবে জরিমানার বিষয়ে কিছু বলেননি হাইকোর্ট। সুতরাং, আড়াই কোটি টাকা জরিমানা তাকে দিতেই হবে। অন্য আসামি সিগমা হুদা বেশ কিছুদিন কারাগারে ছিলেন। ওই সময়কেই তার সাজা হিসেবে গণ্য করতে বলেছেন আদালত।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে নাজমুল হুদা ও সিগমা হুদা আপিল করলে ২০১১ সালের ২০ মার্চ তাদের খালাস দেন হাইকোর্ট।
পরে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ০১ ডিসেম্বর খালাসের রায় বাতিল করে হাইকোর্টে পুনঃশুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। গত বছরের ১৩ এপ্রিল আদেশ পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনও খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত।
এরপর হাইকোর্টে এ মামলার পুনঃশুনানি নেওয়া হয়।
পরে ৮ নভেম্বর নাজমুল হুদাকে বিচারিক আদালতের দেওয়া সাত বছরের কারাদণ্ডের সাজা কমিয়ে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একই মামলায় তিনবছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তার স্ত্রী সিগমা হুদার কারাগারে থাকাকালীন সময়কে সাজা হিসেবে গণ্য করেছেন। বিচারিক আদালত যেদিন রায় গ্রহণ করবেন, সেদিন থেকে ৪৫দিনের মধ্যে নাজমুল হুদাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এর মধ্যে এ মামলায় আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে নাজমুল হুদার করা রিট আবেদনও খারিজ করেন হাইকোর্ট।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৭
ইএস/এমএ