এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রশাসনিক কমিটি এবং ঢাকা জেলা ও দায়রা জজের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বিচারিক কমিটি গঠন করে আদেশ দেন।
আদেশের পরে রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া বলেন, বিচারিক কমিটির কাজ হবে কারা জড়িত, কিভাবে প্রশ্নফাঁস হচ্ছে, কার কার মাধ্যমে, কোন মাধ্যমে ফাঁস হচ্ছে, সেগুলো চিহ্নিত করবে এবং সেটার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা থাকলে, সেটা বা কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, সে বিষয়ে পরামর্শ দেবে।
‘ঢাকা জেলা ও দায়রা জজের নেতৃত্বে এ কমিটিতে থাকবেন নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আইন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন করে ডেপুটি সেক্রেটারি। ’
ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া বলেন, প্রশ্নফাঁস কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়, পাবলিক পরীক্ষায় ভবিষ্যতে যেন আর না ঘটে, কী পদ্ধতি অনুসরণ করলে এটা হবে না, সে বিষয়ে পরামর্শ দেবেন প্রশাসনিক কমিটি। ‘বুয়েটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদের নেতৃত্বে এই কমিটিতে থাকবেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সোহেল রহমান, মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি), কম্পিউটার সোসাইটির একজন তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এবং অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মর্যাদার একজন কর্মকর্তা থাকবেন। ’
ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া আরও বলেন, আদালতের এই আদেশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে কমিটিগুলো কাজ শুরু করবে এবং কাজ শুরুর ৩০ দিনের মধ্যে কমিটির প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে হবে।
এর আগে সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবী চলতি এসএসসি পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় নতুন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া, ফাঁসের ঘটনায় বিচারিক ও প্রশাসনিক তদন্ত কমিটি গঠন এবং প্রশ্নপত্র ফাঁসের অপরাধে দণ্ডারোপে আইন প্রণয়নের নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মনিরুজ্জামান।
প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন যুক্ত করে আদালতে বুধবার রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আইনুন্নাহার সিদ্দিকা, সিকদার মাহমুদুর রাজি, মো. রাজু মিয়া ও নূর মোহাম্মদ আজমী।
রিটের প্রাথমিক শুনানির পর আদালতের রুল জারির বিষয়ে আইনজীবী আইনুন্নাহার সিদ্দিকা বলেন, রুলে চলতি এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
দুই সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষা সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব, আইন সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের ড্রাফটিং উইংয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, তথ্যপ্রযুক্তি সচিব, বিটিআরসি’র সচিব-চেয়ারম্যান, বিটিসিএল’র চেয়ারম্যান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক-চেয়ারম্যান, ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল সিলেট ও দিনাজপুর উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, চলতি বছরে এসএসসির যতগুলো পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে, তার সবক’টির প্রশ্নই ফাঁস হয়েছে। এসব অভিযোগে ছাত্র-শিক্ষকসহ অনেককে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৮/আপডেট ১৬৪৫ ঘণ্টা
ইএস/এইচএ/
** প্রশ্নফাঁস: এসএসসি পরীক্ষা বাতিল চেয়ে রিট