ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ময়মনসিংহের রিয়াজ উদ্দিনের রায় যে কোনো দিন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৮
ময়মনসিংহের রিয়াজ উদ্দিনের রায় যে কোনো দিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার আলবদর বাহিনীর প্রধান রিয়াজ উদ্দিন ফকিরের রায় যে কোনো দিন ঘোষণা করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বুধবার (২১ মার্চ) বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল যুক্তি তর্ক শেষে রায়ের জন্য সিএভি (রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমান) রাখেন।
 
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর ঋষিকেষ সাহা।

আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন।

এ মামলায় তিন আসামির মধ্যে অন্য দু’জন ফুলবাড়িয়ার আলবদর বাহিনীর প্রধান আমজাদ আলী গ্রেফতারের পর ও রাজাকার ওয়াজ উদ্দিন পলাতক অবস্থায় মারা গেছেন। এজন্য তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

রিয়াজের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, আটক, অপহরণ, নির্যাতন ও ধর্ষণের পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ২২ আগস্ট থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত ফুলবাড়িয়া উপজেলার বেবিট্যাক্সি স্ট্যান্ড, রাঙ্গামাটিয়া ঈদগাহ সংলগ্ন বানা নদী, দিব্যানন্দ ফাজিল মাদ্রাসা, ফুলবাড়িয়া ঋষিপাড়া, আছিম বাজার ও ভালুকজান গ্রামে তিনি অপরাধগুলো সংঘটিত করেন বলেও অভিযোগে বলা হয়েছে।

২০১৬ সালের ১১ ডিসেম্বর রিয়াজ ও ওয়াজের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।

এর আগে ওই বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি তিন আসামির বিরুদ্ধে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে ওইদিনই প্রসিকিউশনের কাছে হস্তান্তর করেন তদন্ত সংস্থা। এর ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ তৈরি করে ২০১৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর দাখিল করেন প্রসিকিউশন।

এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর থেকে ১ বছর ৪ মাস ৭ দিনে তদন্তকাজ সম্পন্ন করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর ২০১৬ সালের ১১ আগস্ট আমজাদ ও রিয়াজকে ফুলবাড়িয়া উপজেলার কেশরগঞ্জ ও ভালুকজান গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পরদিন ১২ আগস্ট ট্রাইব্যুনালে সোপর্দ করার উদ্দেশে ময়মনসিংহ থেকে দুই আসামিকে নিয়ে আসার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় পড়ে পুলিশের প্রিজন ভ্যান। এতে চার পুলিশ ও আসামি আমজাদ হাজী গুরুতর আহত হন। পরে আমজাদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যান তিনি। এদিকে পলাতক অবস্থায়ই ওয়াজ উদ্দিনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায় অভিযোগ গঠনের পরে।

গ্রেফতারকৃত রিয়াজ উদ্দিন ফকিরকে সেফহোমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থা।

ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভালুকজান গ্রামের শহীদ তালেব মণ্ডলের ছেলে খোরশেদ আলী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, তার বাবা তালেব মন্ডলকে আখিলা নদীর ব্রিজের ওপর দাঁড় করে গুলি করে হত্যা করেন থানা রাজাকার বাহিনীর প্রধান আমজাদ ও আলবদর বাহিনীর প্রধান রিয়াজ ফকিরের নেতৃত্বে ওয়াজউদ্দিনসহ রাজাকাররা।

এছাড়া মামলায় বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আমজাদ আলী, রিয়াজউদ্দিন ফকির ও ওয়াজউদ্দিন হত্যা-গণহত্যা, ধর্ষণসহ নানা মানবতাবিরোধী অপরাধে নেতৃত্ব দেন। আছিম যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাসহ বহু মানুষকে হত্যা ওপাটিরায় দুই হিন্দু নারীকে ধর্ষণের অভিযোগও করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৯ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৮
ইএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।