বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার (১৪ মে) রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
পরে মোতাহার হোসেন সাজু বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপির এক ভাইস চেয়ারম্যান একটি রিট করেছেন জনস্বার্থে। কিন্তু এটা জনস্বার্থ নয়, দলীয় স্বার্থ। কারণ তারা একটাও সুনির্দিষ্টভাবে গ্রেফতারের তথ্য দেখাতে পারেনি যে, মামলা ছাড়া কাউকে আটক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, উভয়পক্ষে শুনানি শেষে আদালত গ্রেফতার সংক্রান্ত আপিল বিভাগের নির্দেশনা ভঙ্গ করে খুলনায় গ্রেফতার বা হয়রানি না করার নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশের মহাপরিদর্শক, খুলনার পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপারকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া রুল জারি করেছেন আদালত। রুলে খুলনার বিএনপির নেতা-কর্মী, সমর্থক, ভোটের প্রচারণাকারীদের গণগ্রেফতার, হয়রানি করা কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ব বর্হিভূত ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
স্বরাষ্ট্র সচিব, নির্বাচন কমিশন, পুলিশের মহাপরিদর্শক, খুলনার পুলিশ কমিশনার ও পুলিশের সুপারকে রুলের জবাব দিতে হবে।
আদেশের পরে মওদুদ আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, কেন এই গণগ্রেফতার, কেন এই হয়রানি সুপ্রিমকোর্টের দেওয়া নির্দেশনার পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না তার কারণ দর্শাতে বলেছেন আদালত।
আর এর মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দিয়েছেন এই যে, আইজিপি, খুলনার পুলিশ কমিশনার ও খুলনা এসপির প্রতি। তাদের প্রতি নির্দেশনা হলো কাউকে গণগ্রেফতার করতে পারবে না। কাউকে হয়রানি করতে পারবে না, সাদা পোশাকে কাউকে গ্রেফতার করতে পারবে না এবং এই রায়ের পরিপন্থী কোনো কার্যক্রম তারা করতে পারবে না বলে আদালত একটা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।
এর নির্দেশনা বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে খুলনা সিটি করপোরেশনে নির্বাচনী পরিবেশ ফিরে আসবে। যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তাহলে বিএনপি সেখানে বিপুল ভোটে জয় লাভ করবে।
নির্বাচনকালীন সময় পর্যন্ত অন্তবর্তী এ আদেশ বলবৎ থাকবে বলেও জানান মওদুদ আহমদ।
এর আগে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচন ঘিরে দলের নেতাকর্মীদের নির্বিচারে গ্রেফতারের অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে রিট করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান।
রোববার (১৩ মে) দুপুরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ রিটের তথ্য জানিয়েছেন। তিনি গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে ওইদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন।
মওদুদ আহমদ বলেন, খুলনায় নির্বাচনী প্রচারণার সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের যেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেটা আইনসম্মত নয় এবং সুপ্রিম কোর্টের রায় পরিপন্থি। সুপ্রিম কোর্টের রায় অমান্য করে এটা করা হচ্ছে। তারা আইন মানছেন না। এ আইন অমান্য ও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা রিট ফাইল করেছি।
খুলনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘অব্যাহতভাবে গণগ্রেফতার চলছে অভিযোগ করে মওদুদ আরও বলেন, সাদা পোশাকধারী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিবালোকে যেভাবে নেতাকর্মীদের আটক করছে তা নজিরবিহীন। রাতে আমাদের নির্বাচনী এজেন্টদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। তারা বাড়িতে থাকতে পারছে না।
‘সাদা পোশাকধারীরা যেভাবে গ্রেফতার করছে এটা আমাদের দেশের আইনের পরিপন্থি। এ বিষয়ে আমাদের সুপ্রিম কোর্টের একটি বিখ্যাত রায় রয়েছে। ওই রায়ে বলা হয়েছে, এ ধরনের কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। কীভাবে করতে হবে, কোনটা সঠিক হবে, কোনটা সঠিক হবে না, সে গাইডলাইন দেওয়া আছে।
আগামী ১৫ মে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৮
ইএস/এএ