হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (১২ আগস্ট) বিআরটিএ’র প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপনের পর এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ৭ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো.খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে জাবালে নূরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী পঙ্কজ কুমার কুণ্ডু।
পরে রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, বিআরটিএ’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-জাবালে নূর দুই পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা করে দেবে। এজন্য তারা সময় চেয়েছিলো। কিন্তু আদালত সময় দেয়নি। এদিকে চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স কোন যোগ্যতার ভিত্তি দেওয়া হয় এবং সড়কে চলাচলকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিআরটিএ’র নেওয়া পদক্ষেপের প্রতিবেদন নিয়ে শুনানির জন্য ৭ অক্টোবর দিন ঠিক করেছেন।
এর আগে ৩০ জুলাই এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট আদেশ দেন।
৩০ জুলাই ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেছিলেন, বিদ্যমান যে ট্রাফিক আইন আছে তা যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না এবং শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের নিহত দুই শিক্ষার্থীর প্রত্যেকের পরিবারকে ব্যাংক ইন্টারেস্টসহ দুই কোটি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
তিনি বলেন, আদালত দুই পরিবারের তাৎক্ষণিক চাহিদা মেটানোর জন্য জাবালে নূর পরিবহনকে এক সপ্তাহের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে আহত হয়ে যেসব শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে আছেন তাদের চিকিৎসা খরচ বহন করতেও নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এছাড়া চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স কোন যোগ্যতার ভিত্তি দেওয়া হয় এবং সড়কে চলাচলকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিআরটিএ কি পদক্ষেপ নিয়েছে সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে বিআরটিএ’কে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
কুর্মিটোলার এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় জাবালে নূর পরিবহনের দায় নির্ধারণে তদন্ত প্রতিবেদন দুই মাসের মধ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালকের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে সহায়তা করবে পুলিশ ও বিআরটিএ। জানান রুহুল কুদ্দস কাজল।
পরবর্তী আদেশের জন্য ১২ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে। ওই দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে। এ আদেশ অনুসারে বিআরটিএ প্রতিবেদন দাখিল করে।
তবে পাঁচ লাখ টাকা করে দেওয়ার হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছিলো জাবালে নূর। কিন্তু ৯ আগস্ট আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত না করে আবেদনটি ৪ অক্টোবর শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়েছেন।
৩০ জুলাই দুপুরে হোটেল র্যাডিসনের সামনে জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার ঘেঁষে রাস্তার বাঁ-পাশে দাঁড়ানো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একদল শিক্ষার্থীর উপর উঠে যায় জাবালে নূর পরিবহনের একটি বেপরোয়া বাস। এতে দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। আহত হন আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। প্রতিবাদে তখন বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যে, মিরপুর-আব্দুল্লাহপুর রুটের জাবালে নূরের একাধিক বাস পাল্লাপাল্লি করতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২২ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৮
ইএস/এএ