জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে আটক আছেন খালেদা জিয়া। তিনি কারাগারে আটক থাকলেও তার বিরুদ্ধে চলমান অন্যান্য মামলায় তাকে হাজির করা কারা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব।
এ অবস্থায় কিভাবে মামলা চলবে, খালেদার অনুপস্থিতিতে যুক্তিতর্ক শুনানি করা যাবে কিনা? কিংবা খালেদা হাজির না হলে তার জামিন বাতিল করা যাবে কিনা- এ নিয়ে আদালতে খালেদার আইনজীবী ও দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবীরা নিজ নিজ পক্ষে বক্তব্য রাখেন।
দুই পক্ষকেই শুনে বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে আরও অধিকতর শুনানি ও আদেশের জন্য দিন ধার্য করে আদালতে মুলতবি করেন বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারের ভিতর অবস্থিত ৫ম বিশেষ জজ আদালতে মামলাটির বিচারকাজ চলছে।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া ও আমিনুল ইসলাম। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল।
মামলা উপলক্ষে গোটা আদালত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। পুরাতন কারাগারের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধ রাখা হয় আশপাশের দোকানপাটও। মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। প্রস্তুত রাখা হয় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি।
গত ০৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিভাগ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচার সম্পন্ন করতে ঢাকার পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ী আদালত স্থাপন করে গেজেট প্রকাশ করে।
আইন মন্ত্রণালয়ের ওই গেজেটে বলা হয়, নিরাপত্তাজনিত কারণে সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী আদালত থেকে নাজিমুদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের কক্ষ নম্বর-৭ কে অস্থায়ী আদালত ঘোষণা করা হয়েছে। এখন থেকে সেখানেই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারকাজ সম্পন্ন হবে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়া দণ্ডিত হওয়ার পর থেকে পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি আছেন। এরপর থেকে তারিখ পড়লেও অসুস্থ থাকায় চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় আদালতে হাজির হতে পারেননি তিনি।
চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় মোট আসামি চারজন। খালেদা ছাড়া অভিযুক্ত অপর তিন আসামি হলেন- খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ-এর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ৩২ জন সাক্ষী। ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়। এ ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে এ মামলা করে দুদক।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৮
এমআই/এমজেএফ