বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুস সালাম খান এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-শরীয়তপুর সদর উপজেলার চরসন্দী গ্রামের কাদের তালুকদারের ছেলে রেজাউল করিম সুজন (২৪), মজিবর রহমান পেদার ছেলে সাইফুল ইসলাম পেদা (২২) ও মান্নান মাদবরের ছেলে দুলাল মাদবর (২২)।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মির্জা হজরত আলী। তিনি জানান, ধর্ষণ ও হত্যার শিকার সামসুন্নাহার তানু শরীয়তপুর সদর উপজেলার চরসন্দী গ্রামের হাফিজুর রহমান পাটোয়ারীর মেয়ে। তিনি সরকারি গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজের অনার্সের ছাত্রী। ২০১২ সালে শরীয়তপুর পৌরসভার দক্ষিণ বালুচরা গ্রামের লালচান মোল্যার ছেলে দুবাই প্রবাসী ইসহাক মোল্যার সঙ্গে বিয়ে হয় তানুর। বিয়ের পর ইসহাক আবার দুবাই চলে যান। আর তানু শ্বশুরবাড়ি থেকে কলেজে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে থাকেন। এরই মধ্যে তানুর সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক হয় রেজাউল করিম সুজনের। ২০১৪ সালের ১৭ আগস্ট বিকেলে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার কথা বলে শ্বশুরবাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন তানু। এ ঘটনায় পালং মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তানুর ভাসুর আবুল কাসেম মোল্যা। পুলিশ তানুর মোবাইলের কল লিস্টের সূত্র ধরে প্রথমে সুজনকে আটক করে। এরপর তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় সাইফুল ও দুলালকে। তারা তিনজনই তানুকে ধর্ষণের পর হত্যার কথা স্বীকার করেন। এর ভিত্তিতে ২২ আগস্ট শরীয়তপুর পৌরসভার ধানুকা এলাকার একটি বিলে কচুরিপানার নিচ থেকে ইট বাঁধা অবস্থায় তানুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিন আসামিই ১৬৪ ধারায় ধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। পরে ওই সাধারণ ডায়েরিটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২২ ডিসেম্বর তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। পরে মামলাটি পরিচালনার দায়িত্ব স্থানান্তর করা হয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে। মামলায় ১৭ জনের সাক্ষগ্রহণ ও নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় বুধবার এ রায় দেন ট্রাইব্যুনাল। রায় দেওয়ার সময় আসামি সাইফুল ও দুলাল উপস্থিত ছিলেন। তবে দুই বছর আগে জামিনে বের হয়ে আত্মগোপনে আছেন প্রধান আসামি সুজন।
আসামিপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট শাহ আলম।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৮
এসআই