বৃহস্পতিবার (৬ ডিসেম্বর) বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ এ রায় দেন।
বেঞ্চের দ্বিতীয় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ রায়ের সঙ্গে একমত পোষণ করেন।
তবে কনিষ্ঠ বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল রুল মঞ্জুর করে এ দু’জনকে দেওয়া নিম্ন আদালতের জামিন বাতিল করে দেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। আসামিপক্ষে ছিলেন আসাদুর রউফ ও শেখ বাহারুল ইসলাম।
২৫ জানুয়ারি ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এই দু’জনকে জামিন দিয়েছিল। ৩১ জানুয়ারি হাইকোর্ট তাদের জামিন বাতিলে রুল জারি করেছিলেন।
শুনানির সময় উত্থাপিত আইনি প্রশ্ন নিষ্পত্তির জন্য বৃহত্তর বেঞ্চ গঠনের কথা বলে মামলার নথি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠিয়েছেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
পরে এ প্রধান বিচারপতি বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করে দেন।
রায়ের পর খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, মামলাটির মূল বিবেচ্য বিষয় ছিল, অর্থ পাচারের মামলায় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জামিন দেওয়ার এখতিয়ার আছে কিনা। সে প্রশ্নে একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ রায় হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধি ও অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইন পর্যালোচনা করে দু’জন বিচারপতি বলেছেন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের এখতিয়ার আছে।
‘তবে এ দুই বিচারপতি জামিন দেওয়ার প্রশ্নে বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। আর্থিক অপরাধ, হোয়াই কালার ক্রাইমের মতো বিষয়গুলো অবশ্যই বিবেচনায় নিয়ে জামিন দিতে হবে। জামিন চাইলেন আর দিয়ে দিলেন, এমনটা যেন না হয়। তবে জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটের এখতিয়ার আছে। সেক্ষেত্রে যথাযথ বিচারকি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। ’
খুরশীদ আলম খান বলেন, যে বিচারপতি দ্বিমত পোষণ করে রায় দিয়েছেন, তিনি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন রায় পর্যালোচনা করে ম্যাজিস্ট্রেটের জামিন দেওয়ার ক্ষমতা বা এখতিয়ার নেই বলে মত দিয়েছেন।
‘বৃহত্তর বেঞ্চের সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের এ রায়ের ফলে এটাই দাঁড়ালো যে, অর্থ পাচারের মামলায় ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট আসামিকে জামিন দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। তবে মামলার গুণাগুণ দেখে অত্যন্ত সতর্কভাবে জামিন দিতে হবে। আর এ মামলার দুই আসামির জামিন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগেও বহাল থাকায় তাদের জামিন বহাল থাকছে। তাছাড়া এ মামলার অন্য সব আসামিরাও জামিনে আছেন। ’
২৫ জানুয়ারি দুদকের সহকারী পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান মতিঝিল থানায় আটজনকে আসামি করে মুদ্রাপাচার আইনের এ মামলা দায়ের করেন।
ওইদিন বিকেলে রমনার মৎস্যভবন এলাকা থেকে ওয়াহিদুল হক, আবুহেনা মোস্তফা কামালসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে। তবে ওইদিনই দু’জনকে জামিন দিয়ে একজনকে রিমান্ডে পাঠায় আদালত।
মামলায় বলা হয়, আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া অফশোর কোম্পানিতে বিনিয়োগের নামে ১৬৫ কোটি টাকা এবি ব্যাংকের চট্টগ্রাম ইপিজেড শাখা থেকে দুবাইয়ে পাচার করে এবং পরে তা আত্মসাৎ করে। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে অর্থ পাচারের ওই ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৮
ইএস/এএ