এ বিষয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের ভ্রমণ ও পরিদর্শনের ক্ষেত্রে প্রটোকলব্যবস্থা নিয়ে কয়েক দফা নির্দেশনাও দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আর হাইকোর্টের এ নির্দেশনা সার্কুলার আকারে জারি করতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ও আইন সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালতে ফিরোজ আলমের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফয়সাল এইচ খান ও আইনজীবী মইনুদ্দীন টিপু। ওই সময়ের ফেনী জেলা জজ আদালতের দুই কর্মচারীর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী।
আইনজীবীরা জানান, ২০০৩ সালের ২০ অক্টোবর হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলামের সফরসূচি জানিয়ে ফেনী জজ আদালতে চিঠি দেওয়া হয়। পরদিন এ চিঠি জজ আদালত গ্রহণ করেন। ২২ অক্টোবর বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম ট্রেনে ফেনীতে পৌঁছান। দুপুরে স্টেশনে নেমে জজ আদালতের কোনো প্রতিনিধি না পেয়ে টেলিফোন করেন। কিন্তু আদালতের এক কর্মচারী জানান জেলা জজ এজলাসে আছেন। তিনি (জেলা জজ) এজলাস থেকে নামলে বিষয়টি জানাবেন। এর কিছুক্ষণ পর ফের তিনি টেলিফোন করেন। তখনও একই কথা বলা হয়। দীর্ঘ অপেক্ষার পর বিচারপতি তার ছেলেকে আদালতে পাঠালে জেলা জজ বা তাদের কোনো কর্মকর্তা তার সঙ্গে কথা বলেননি। পরে জেলা প্রশাসক ওই বিচারপতির প্রটোকলের ব্যবস্থা করেন।
সফর শেষে ওই বিচারপতি ঢাকায় ফেরার পর একই সালের ২৯ অক্টোবর ফেনীর জেলা জজ মো. ফিরোজ আলমসহ তিনজনের প্রতি স্বতপ্রণোদিত হয়ে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
জেলা জজ ছাড়া অন্যরা হলে, ফেনী জেলা আদালতের নাজির ইয়ার আহমেদ ও নায়েবে নাজির আলতাফ হোসেন। তারা নোটিশে পেয়ে একই সালের ১২ নভেম্বর হাইকোর্টে হাজির হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। কিন্তু হাইকোর্টে তাদের লিখিত ক্ষমা প্রার্থনা দাখিল করতে বলেন এবং ১৭ নভেম্বর তারিখ ঠিক করেন। এরমধ্যে ফিরোজ আলম আপিল বিভাগে আবেদন করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। পরবর্তীতে ২০১১ সালের ৩১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ ফিরোজ আলমের আবেদন খারিজ করে দেন।
এরপর হাইকোর্টে আদালত অবমাননার রুলের ওপর শুনানি শুরু হয়।
আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, রায়ে নাজির ও নায়েবে নাজিরকে অব্যাহতি দেন। তবে তৎকালীন জেলা জজ ফিরোজ আলমকে আদালত অবমাননার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ১৫ দিনের মধ্যে অনাদায়ে সাত দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সফরে জেলা জজ শিপের প্রটোকল দেওয়া নিয়ে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছেন। যেগুলো সার্কুলার আকারে জারি করতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ও আইন সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, রায়ের অনুলিপি পাওয়া গেলে নির্দেশনাসমূহ বিস্তারিত পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
ইএস/এসএইচ